পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১০৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিবেক পিঠের ওই পাজরায় অথবা লোল ও তুলার আঁশ মাখানে গালে ? আধঘণ্টা ধরিয়া চীৎকার করিবে মেয়েটা । মণিমালা ছাড়া কারো সাধ্য হইবে না। সহজে ওর সেই কান্না থামায়। আধঘণ্টা মরার মত পড়িয়া থাকিয়া ঘনশ্যাম উঠিয়া পড়িল । অশ্বিনীর কাছেই আবার সে কয়েকটা টাকা ধার চাহিবে, যা থাকে কপালে। এবার হয়তো রাগ করিবে অশ্বিনী, মুখ ফিরাইয়া বলিবে তার টাকা নাই। হয়তো দেখাই করিবে না। তবু অশ্বিনীর কাছেই তাকে হাত পাতিতে হইবে। আর কোন উপায়ই নাই । বহুকালের পুরানো পোকায় কাটা সিস্কের জামাটি দিন তিনেক আগে বাহির করা হইয়াছিল, গায়ে দিতে গিয়া ঘনশ্যাম থামিয়া গেল । আর জামা নাই বলিয়া সে যে এই জামাটি ব্যবহার করিতেছে, এই জামা গায়ে দিয়া বাজার পর্যন্ত করিতে যায়, অশ্বিনী তা টের পাইবে না। ভাবিবে, বড়লোক বন্ধুর সঙ্গে দেখা করিতে যাইবে বলিয়া বাক্স প্যাটরা ঘাটিয়া মান্ধাতার আমলের পোকায় কাটা দাগ ধরা সিস্কের পাঞ্জাবীটি সে বাহির করিয়াছে। মনে মনে হয়তো হাসিবে অশ্বিনী । তার চেয়ে ছেড়া ময়লা সাটটা পরিয়া যাওয়াই ভাল। সার্টের ছেড়াটুকু সেলাই করা হয় নাই দেখিয়া ঘনশ্যামের অপূর্ব সুখকর অনুভূতি জাগিল। কাল লতাকে সেলাই করিতে বলিয়াছিল। একবার নয়, দু’বার। সে ভুলিয়া গিয়াছে। ন্যায়সঙ্গত কারণে মেয়েটাকে মারা চলে। ও বড় হইয়াছে, কঁাদাকাটা করিবে না। কঁদিলেও নিঃশব্দে কঁদিবে, মুখ বুজিয়া। ‘লত ইদিকে আয়। ইদিকে আয় হারামজাদি মেয়ে ।” চড় খাইয়া ঘনশ্যামের অনুমান মত নিঃশব্দে কঁদিতে কঁাদিতে S8