পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিবেক কিন্তু ঘড়িটা এভাবে কাছে রাখা উচিত নয়। বাড়ীতে রাখাও উচিত নয়। ডাক্তার বিদায় হইলেই সে ঘড়িটা বেচিয়া দিয়া আসিবে। যেখানে হোক, যত দামে হোক । নিখিল ডাক্তার মণিমালাকে পরীক্ষা করে, অধোক মন দিয়া ঘনশ্যাম তার প্রশ্নের জবাব দেয়। সোণার ঘড়ি কোথায় বিক্রী করা সহজ ও নিরাপদ তাই সে ভাবিতে থাকে সমস্তক্ষণ। বাহিরের ঘরে গিয়া কিছুক্ষণের সঙ্কেতময় নীরবতার পর নিখিল ডাক্তার গম্ভীর চিন্তিত মুখে যা বলে তার মানে সে প্রথমটা বুঝিয়া উঠিতে পারে না। মণিমালা বাচিবে না ? কেন বঁাচিবে না ? এখন তো তার টাকার অভাব নাই, যতবার খুসী ডাক্তার আনিয়া চিকিৎসা করাইতে পরিবে । মণিমালার না বঁচিবার কি কারণ থাকিতে পারে । “ভাল করে দেখেছেন ?” বোকার মত প্রশ্ন করা । মাথার মধ্যে সব যেরকম গোলমাল হইয়া যাইতেছে তাতে বোকা না বনিয়াই বা সে কি করে। গোড়ায় ভাক্তার ডাকিলে, সময়মত দু’চারটি ইনজেকশন পড়িলে মণিমালা বাচিত । তিন-চার দিন আগে ব্রেন কমপ্লিকেশন আরম্ভ হওয়ায় প্রথম দিকে চিকিৎসা আরম্ভ হইলেও বঁাচানোর সম্ভাবনা ছিল । তিন চার দিন । মণিমালা যে ক্রমাগত মাথাটা এপাশ ওপাশ করিত, চোখ কপালে তুলিয়া রাখিত, সেটা তবে ব্রেন খারাপ হওয়ার লক্ষণ। রুলি খুলিতে গেলে সে সজ্ঞানে বাধা দেয় নাই, হাতে টান লাগায় আপনা হইতে মুখ বিকৃত করিয়া গলায় বিশ্ৰী ভাঙ্গা ভাঙ্গা আওয়াজ করিয়াছিল। স্থির নিশ্চল না হইয়াও মানুষের জ্ঞান যে লোপ পাইতে পারে অত কি ঘনশ্যাম জানিত । চেষ্টা প্ৰাণপণে করিতে হইবে। তবে এখন সব ভগবানের হাতে। Sy08