পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ট্র্যাজেডির পর বাড়ী ফিরিতেই মান করিয়া খাওয়ার তাগিদ আসিল । তার জন্য কেউ হেঁসেল আগলাইয়া বসিয়া থাকিতে পারিবে না। এখনো সকলের থাওরার হাঙ্গামা চুকিতে অনেক দেৱী, এখন হইতে তাগিদ কেন, ভৎসনা কেন ? সে তো বলিয়াই রাখিয়াছে তার জন্য বসিয়া থাকিবার দরকার নাই, ভাত বাড়িয়া রাখিবো। নিজের খুসীমিত সময়ে সে ভাত খাইবে, তা-ও কি কারও সহ্য হয় না ? তা ছাড়া, এমনভাবে বলে কেন ! আগের মত কাছে আসিয়া গায়ে হাতবুলানো তোষামোদের মত দাবী আর ভৎসনা জানায় না কেন ? সুধীর কাজে চলিয়া গিয়াছে। সত্যপ্ৰসাদ কাজে যাওয়ার জন্য ঢোল কোট-পেণ্টালুন পরিয়া প্ৰস্তুত হইয়া পান চিবাইতে চিবাইতে হুকায় টান দিতেছেন । পিসীমা রোদে দেওয়া তোষকটি উল্টাইয়া দিতেছেন। দিদি ভাত মাখিয়া ছোট ছেলেটির মুখে তুলিয়া দিতেছে। বাসন্তী গুণ গুণ করিয়া গান গাহিতে গাহিতে এঘর ওঘর করিতেছে । ঘামে ভেজা জামাটা খুলিতে খুলিতে মিহির কেমন একটা আতঙ্ক বোধ করিতে লাগিল । সে তো সকলকে ত্যাগ করে নাই, ধীরে ধীরে তাকেই সকলে ত্যাগ করিতেছে । তার কাছে প্ৰত্যাশা যত কমিতেছে, তার মূল্যও তত কমিয়া যাইতেছে। প্রথম সকলে কঁাদিয়াছিল, এখনো হয়তো শুধু কথা উঠিলে একটু আপশোষ করে, দুদিন পরে তাও করিবে না । রাত্রে বারানদায় সকলে সারি দিয়া খাইতে বসিলে অনেকদিন পরে মিহির একসঙ্গে বসিয়া খাইতে আসিল । কেউ যে বিশেষ আশ্চর্য হইল তা নয়, মিহির নিজের মধ্যে অস্বস্তি বোধ করিতে লাগিল। সকলে ধীরে ধীরে পরস্পরের সঙ্গে ভাঙ্গা ভাঙ্গা কথা বলে, মিহিরের মনে হয় তার অনভ্যস্ত উপস্থিতির জন্য সকলের বোধ হয় কেমন কেমন লাগিতেছে। S) Rà