পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মাদুষ হাসে কোন তুলনায় কিছুই নয়, এরকম হইল কেন ? কেন সে শোকদুঃখে কাবু হইয়া পড়ে নাই ? কোন কিছুকে ভালবাসে নাই বলিয়া ? সে যে কোন কিছুকে ভালবাসে নাই, তাই বা কে বলিল ! যদি তাই হয় যে তার হৃদয়ের মায়ামমতাগুলি অন্যের তুলনায় একেবারে জলো অনুভূতি, এরকম হইল কেন ? তার হৃদয় মন অসাড় বলিয়া ? মানুষ হিসাবে সে অস্বাভাবিক বলিয়া ? অসাধারণ বলিয়া ?...... দার্শনিক চিন্তার পীড়ন তো সহজ নয়, দুর্বল রোগীর মধ্যে কড়া ওষুধের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার মত। বিছানায় বসিয়া রসময়ের মনে হইতে লাগিল, এতকালের শূন্য জীবনটা আজ যেন জঞ্জালে ভরিয়া উঠিয়াছে। বঁ হাতটি বুকের উপর রাখিয়া রাণী ছোট ছোট নিশ্বাস ফেলিয়া ঘুমাইতেছে। তা ঘুমাক, এ বয়সে ঘুম বেশী হয়। কিন্তু ওকে কেন সে নিজের জীবনে টানিয়া আনিয়াছে ? কতটুকু মেয়ে । তার ছোট মেয়ের চেয়েও ছোট! পাড়ার কুমারী মেয়ের সঙ্গে সখিত্ব পাতায়, বয়সে বড় ছেলেমেয়ের ভয়ে সন্ত্রস্ত হইয়া থাকে, নাতিনাতিনীকে আদর করে ছােট ভাইবােনের মত, ঝগড়াও করে, চুরি কবিয়া নভেল পড়ে, গ্রামোফোনের রেকর্ড বাজানোর জন্য সর্বক্ষণ উৎসুক হইয়া থাকে, জানালার খড়খড়ি তুলিয়া পরের বাড়ীতে উকি দেয়— জানালাটা খোলা পড়িয়া আছে। হয়তো ঘুমাইয়া পড়ার আগে শান্তির সঙ্গে জানালায় দাড়াইয়া কিছুক্ষণ কথা বলিয়াছিল, বন্ধ করিতে ভুলিয়া গিয়াছে। রসময় জানালাটা বন্ধ করিতে উঠিয়া গেল। শান্তিদের ঘরের জানালাও খোলা, কিন্তু ঘর অন্ধকার। দু’জনের মৃদুস্বরে কথা বলার। আওয়াজ কানে আসিতেই রসময় তাড়াতাড়ি জানালা বন্ধ করিয়া দিল । ঠোঁটে তখন তার একটু টান পড়িয়াছে। ওদের বয়সের পার্থক্য SVG?