পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমুদ্রের স্বাদ দুঃস্বপ্ন। কিন্তু স্বামীই তো মেয়েদের সব নয়, গত জীবনের একটা বড়রকম প্ৰত্যাবৰ্ত্তন তো নীলা আশা করিয়াছিল, যে প্ৰত্যাবর্তনের সঙ্গে সহরে তাদের সেই আগেকার বাড়ীতে থাকা, সকলের না হোক অন্ততঃ একজনের কাছে সেইরকম আদর যত্ন পাওয়া, অবসর সময় বলাইদের মত কোন প্ৰতিবেশীর তিনতলা বাড়ীর ছাতে উঠিয়া চারিদিকে বাড়ীর সমুদ্র দেখা আর বলাই-এর মত কারো মুখে আসল সমুদ্রের গল্প শোনার মোটামুটি একটা মিল আছে। এখানে নীলাকে বিশেষ অনাদর কেউ করে না, লজ্জায় কম করিয়া খাইলেও মামাবাড়ীর চেয়ে এখানেই তার পেটভরা খাওয়া জোটে, এখানে তাকে যে দয়া করিয়া আশ্রয় দেওয়া হয় নাই, এখানে থাকিবার স্বাভাবিক অধিকারই তার আছে, এটা সকলে যেমন সহজভাবে মানিয়া লইয়াছে, সে নিজেও তেমনি আপনা হইতে সেটা অনুভব করিয়াছে। মামাবাড়ীর চেয়েও এখানকার অজানা অচেনা নরনারীর মধ্যে ঘোমটা দেওয়া বধূজীবন যাপন করিতে আসিয়া নীলা তাই স্বস্তি পাইয়াছে অনেক বেশী। তবু একটা অকথ্য হতাশার তীব্র ঝাঝালো স্বাদ সে প্ৰথম অনুভব করিয়া, এখানে। গুমরাইয়া গুমারাইয়া এই কথাটাই দিবারাত্ৰি মনের মধ্যে পাক খাইয়া বেড়াইতেছে যে সব তার শেষ হইয়া গিয়াছে, কিছুই তার করার নাই, বলার নাই, পাওয়ার নাই, দেওয়ার নাই--শানাই বাজাইয়া একদিনে তার জীবনের সাধ আহলাদ সুখ দুঃখ আশা আনন্দের সমস্ত জের মিটাইয়া দেওয়া হইয়াছে। “কঁাদছ নাকি ? কি হয়েছে ?” ‘दक्षेिनि cड ।' কঁাদিতে কঁাদিতেই নীলা বলে সে কঁদে নাই। জানুক অনাদি, কি আসিয়া যায় ? কঁাদা আর না-কঁাদ সব সমান নীলার । নীলার ܠܗ