পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমুদ্রের স্বাদ পানবিড়ির দোকানের পাশে রোয়াকে বসিয়া সাত-আট জন বিড়ি বানাইতেছিল, ফেলনাকে দেখিয়াই তারা একসঙ্গে কলরব করিয়া উঠিল। ধারের জন্য কাদেরের সঙ্গে ঝগড়া হইয়াছিল, দু’পয়সা প্যাকেটের একটি সিগারেট দিয়া . কাদের তাকে খাতির করিল। নাসিম সাগ্রহে নানা কথা জিজ্ঞাসা করিতে লাগিল, কদিন আগে ফেলনা যে তার নাকটা থেৎলাইয়া দিয়াছিল, সে যেন তা ভুলিয়াই fag অপরাহেই গলির মধ্যে সন্ধ্যার ছায়া নামিয়াছে মনে হয়। কোন কোন বাড়ীর ভিতরে কলতলায় স্ত্রীলোকদের সোরগোল কাণে আসে, তাড়াতাড়ি গা ধুইয়া প্রসাধন সারিয়া সহরের হাটের জীবন্ত পণ্যগুলি দুয়ারে আসিয়া দাড়াইবে। নিধু মালী মালাই বরফের হাঁড়ি মাথায় পথে বাহির হইল। কিষণলাল তার পানের দোকানের একপাশে বিক্রীর জন্য টাটকা ফুলের মালাগুলি গুছাইয়া রাখিতেছে। পাশে দেশী মদের দোকানে একে হুয়ে মানুষ ঢুকিয়া বাহির হইয়া আসিতেছে। রাত্রে এ গলি জীবন পায়, এখন হইতেই চারিদিকে তার সূচনা। প্রতি পদক্ষেপে ফেলনার বিচিত্র অভিনন্দন জুটিতে থাকে। ছয়ারে ধাড়াইয়া কেউ উৎকট তামাসার মধ্যে আনন্দ প্ৰকাশ করে, ছবির ফ্রেম বঁাধিতে বাধিতে কেউ মুখ তুলিয়া দাবী জানায়, সম্মুখ হইতে আসিয়া কেউ গাজার ছাপ মারা হাতে নীরবে তার হাত চাপিয়া ধরে, তীক্ষা কণ্ঠের আহবানে তার মুখ ফিরাইয়া কেউ জানালার ফঁাকে হাসিভরা মুখখানি সামনে মেলিয়া ধরে। দিগবিজয়ী বীর যেন জয়গৌরবে মণ্ডিত হইয়া তার রাজধানীতে ফিরিয়াছে। রাসির কাছে প্ৰত্যাশিত অভ্যর্থনাই পাওয়া গেল। “এক মাসের মধ্যে আমার বালা এনে দেবে, বলে রাখলাম।” QW。