পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমুদ্রের স্বাদ W কাজল দেওয়া হইবে না, চোখের দিকে চাহিয়াই বিকাশ বুঝিবে চোখের পরিচিত রূপের পরিবর্তন ঘটিয়াছে এবং আরও ভাল করিয়া টের পাইবে সেদিন, যেদিন তার কাজলহীন চোখ চোখে পড়িবে। একবার যদি বিকাশ তার স্বাভাবিক চোখ দেখিতে পায়, গভীর বিতৃষ্ণায় তার মন ভরিয়া যাইবে। আর সে তার ধারে কাছেও কোনদিন আসিবে না । নিজের ঘরে বসিয়া এই কথাটাই রাণী আজি ভাবিতেছিল। অন্য দিনের চেয়ে ভাবনাটা আজ চিন্তারাজ্যের একটু উচু স্তরে চড়িয়া গিয়াছিল, যেখানে মানুষের বুদ্ধি জীবনের কতকগুলি দুর্বোধ্য রহস্তানুভূতির ব্যাখ্যা খুজিয়া মরে, জীবনের অনিয়মগুলির মধ্যে যুক্তি আবিষ্কারের চেষ্টা করে, আত্মচিন্তার প্রসঙ্গে সমালোচনা করে নিজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিশ্বব্ৰহ্মাণ্ডের । এমন একটা অবস্থা বিকাশ কেন সৃষ্টি করিয়াছে, এই একটিমাত্ৰ ছলনাকে ষাতে প্রশ্ৰয় দিয়া চলা ছাড়া সে আর উপায় খুজিয়া পাইতেছে না ? আর কোন বিষয়ে কোন কিছুই তো সে বিকাশের কাছে লুকাইবার চেষ্টা করে না। কি না জানে বিকাশ তার সম্বন্ধে ? অ্যাশ-টের বদলে ছাই ফেলার জন্য ভাঙ্গা কলাই করা বাটি বিকাশকে আগাইয়া দিতে রাণীর কোনদিন এতটুকু সঙ্কোচ হয় নাই। কাকার আশ্রয়ে দিনগুলি যে তার বিশেষ আরামে কাটিতেছে না, বিনয়বাবুর বাড়ীর কয়েকটি ছেলেমেয়েকে রোজ চারঘণ্টা পড়াইয়া সে যে অতি কষ্টে কলেজের খরচটা সংগ্ৰহ করে, সংসারের কাজকর্ম করিতে সে যে তেমন পটু নয়, সময়ও পায় না,-তাও বিকাশের অজানা নয়। কি সে বলিতে বাকী রাখিয়াছে বিকাশকে অথবা বিকাশ যাতে টের না। Vy'y