পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

दकाखड्या করিতে গেলেও ঠকিবে সে নিজেই । সন্ধ্যার পর বাড়ীর কাজ সে হয়তো কিছু কিছু করিয়া দিবার সময় পায়, ইচ্ছা করিয়াই এড়াইয়া চলে। কাজ করিলে রাত জাগিয়া পড়িতে হয়, রাত জাগিয়া পড়িলে চেহারা খারাপ হইয়া যায়। রাত্রে সাড়ে দশটা বাজিতে নাবাজিতে রাণী বিছানায় যায়, ঘুম না আসিলেও চুপ করিয়া শুইয়া থাকে। মুখে ক্লিষ্টতার ছাপ পড়িবার ভয়ে দুশ্চিন্তার সঙ্গে প্রায়ই সে এমন লড়াই করে যে পরদিন আয়নায় মুখ দেখিয়া কান্না আসে। বাড়ীর ভিতরটা বড় অপরিচ্ছন্ন। সেঁতসেঁতে ভিজা উঠানটার শ্যাওলা ঘষিয়াও তোলা যায় না । কমদামী পুরাণে আসবাব আর বাক্স-পেটরায় ঘরগুলি ভক্তি, পা-পোষের কাজ চলে ছেড়া ভাজ করা বস্তায়, আলনার কাজ চলে দড়িতে, এখানে ছেড়া ময়লা কাপড় মেলা, ওখানে চট জড়ানো লেপের বস্তা ঝুলানো, সেখানে জমা করা ঘটি বাটি থালা । কয়েকটা নোংরা চীনামাটির কাপ-ডিসের কাছে চটা ওঠা কলাই করা বাটগুলি দেখিলেই বুঝা যায় ওই বাটতেই এ বাড়ীর অৰ্দ্ধেক লোক চা পান করে । তার উপর আছে বাড়ীর সকলের চালচলন আর কথাবাৰ্ত্তা । যতক্ষণ বাড়ীর মধ্যে থাকে। রাণীর যেন দম আটকাইয়া আসে। ওই বাড়ীতেই কি বাকী জীবনটা তার কাটাইতে হইবে ? কলেজ বন্ধ হইলে বাহিরে বাহিরে দিনগুলি কাটাইয়া দিবার সুযোগটাও যে তার যাইবে নষ্ট হইয়া । কাৎ হইতে হইতে রাণী প্ৰায় বিকাশের গায়ের উপর ঢলিয়া পড়িয়াছিল, হঠাৎ চমকিয়া সোজা হইয়া বসিল । অল্প দূরেই একটা মোড় দেখা যাইতেছে, ওই মোড়টা ঘুরিলেই নিমন্ত্রণ বাড়ী। বাস, তারপর সব শেষ। আজ সারাদিন সে অনেক কিছু কল্পনা করিয়াছিল y