পাতা:সমুদ্রের স্বাদ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমুদ্রের স্বাদ দু’হাতের ভর দিয়া দাড়াইয়া রাণী নীরবে বিকাশের কথার প্রতীক্ষা করে। কি নিষ্ঠুর বিকাশ! এই মানুষটাকে সে এতদিন এত কোমল, এত হৃদয়বান মনে করিয়াছিল । বিকাশ বলে, “ভেবেছিলাম আজ বলব না। তোমার শরীর ভাল নয়, আজ বলা উচিত হবে না । কিন্তু তোমার চোখ দেখে আর না বলে থাকতে পারছি না। রাণী । তোমার চোখ দেখে রোজ অবাক হয়ে যাই, কিন্তু আজ এমন আশ্চর্য রকম সুন্দর দেখাচ্ছে তোমার C5*t- রাণী কাতরভাবে বলিল “কেন। ঠাট্টা করছেন ?? যাই হোক, রাণীর সমস্যা মিটিয়া গেল। পড়া ছাড়িয়া রাণী তার সংসারে গৃহিণী হইতে রাজী হইবে কিনা ভাবিয়া বিকাশের বুক টিপ টিপ করিতেছিল। রাণী রাজী হওয়ায় সে যেন আকাশের চাদ হাতে পাইল । তারপর এ রকম অবস্থায় নারী ও পুরুষ যে সব কথা বলাবলি করে, অনেকক্ষণ সে সব কথা বলাবলির পর বিকাশ গেল বাড়ী। আর রাণী ছুটিয়া গেল নিজের ঘরে। সিড়িতে পা দেওয়ামাত্র কাকীমা রান্নাঘর হইতে ডাক দিলেন তীব্র ধমকের সুরে, সে সাড়াও দিল না। ঘরে গিয়া আলো জালিয়া মুখের সামনে ধরিল প্রসাধনের ছোট আয়নাটি। চোখের কোলে কালি পড়িয়াছে, চোখের পাতা ভারি হইয়া উঠিয়াছে। বেদনাত স্নায়বিক প্রক্রিয়ায় চোখে যে কালি পড়ে, কাজলের চেয়ে তা তো কম সুন্দর করে না মানুষের চোখকে ! কি রহস্যময় মনে হইতেছে তার চোখ দুটিকে ! নিজের চোখ দেখিয়া রাণী নিজেই যেন মোহিত হইয়া যায়। ԳV)