পঞ্চবিংশ প্রবন্ধ । >bペ) ইনি প্রত্যক্ষ-প্রমাণ-গম্য বা অনুমানগম্য নহেন। লোকে সাধারণতঃ শরীর, ইন্দ্রিয়, মন, বুদ্ধি, অহঙ্কার, চিত্ত বা বিজ্ঞানকে আত্মা বলিয়া জানে। কিন্তু শরীর, ইঞ্জিয়, মন, বুদ্ধি, অহঙ্কার, চিত্ত ও বিজ্ঞানের স্রষ্টা ও সাক্ষী, সৰ্ব্বভূতস্থ, সৰ্ব্বাধিষ্ঠান, নিত্য, নিৰ্ব্বিকার, সৰ্ব্বাত্মাপুরুষকে বেদান্তশাস্ত্রোপদেশ ভিন্ন কেহই তর্ক বা বুদ্ধিবলে জানিতে পারে না। বেদান্ত বাক্যোক্ত “তত্ত্বমসি” তুমিই সেই আত্মা, “অহং ব্ৰহ্মান্সি" আমিই ব্রহ্ম, “সোহহং” তিনিই আমি (অর্থাৎ সেই ব্ৰহ্মই আমি), “অয়মাত্মা ব্ৰহ্ম” এই আত্মাই ব্ৰহ্ম, “প্রজ্ঞানং ব্রহ্ম” প্রজ্ঞানই ব্ৰহ্ম, প্রভৃতি মহাবাক্য সকল আলোচনা পূৰ্ব্বক বেদান্ত-বিহিত মার্গ অবলম্বন করত সেই আত্মার ধ্যানই সেই ঔপনিষদ, পুরুষকে জানিবার একমাত্র উপায়। সুতরাং আত্মতত্ত্বোপদেশ জন্ত শাস্ত্রের প্রয়োজন নাই একখা সত্য নহে। বাস্তবিক শাস্ত্র ভিন্ন অন্য কোন উপায়েই সেই আত্মাকে জানা যায় না। অন্য একটা আপত্তি উত্থাপিত হইয়াছিল যে, ব্ৰহ্ম বা আত্মা একটা স্বতঃসিদ্ধ পদার্থ সুতরাং কেবলমাত্র তদ্বিষয়ক জ্ঞান লইয়া কি হইবে ? যতক্ষণ না উক্ত জ্ঞান হেতু কোন কর্তব্য কৰ্ম্ম করা যায় বা কোন অকৰ্ত্তব্য কৰ্ম্ম হইতে নিবৃত্ত হওয়া যায় ততক্ষণ উক্ত জ্ঞান কোন কাজেই লাগে না । সুতরাং কেবল মাত্র ব্রহ্মের উপদেশ দেওয়া অনর্থক এবং ঐ প্রকার অনর্থক উপদেশ দেওয়া বেদান্ত শাস্ত্রের চরম উদ্দেশ্য হইতে পারে না। এ আপত্তিও অকিঞ্চিৎকর । ইতিপূৰ্ব্বে দেখান গিয়াছে যে বেদান্তশাস্ত্রমতে ব্ৰহ্মজ্ঞান হইলেই অবিদ্যা ঘুচিয়া যায় এবং অবিদ্যাজনিত সৰ্ব্বপ্রকার ক্লেশ 'বিনষ্ট হয়। সুতরাং ব্রহ্মজ্ঞানের ফল আপনা হইতেই হয়। অবিদ্যানাশরুপ ব্ৰহ্মজ্ঞানের ফল পাইবার জন্ত ব্ৰহ্মজ্ঞানকে কোন কার্য্যে লাগাইতে হয় না। যদিও অন্ত সমস্ত স্থলে বিধি-নিষেধ-শূন্ত বেদবেদান্ত বাক্য-সকল অপ্রমাণ তথাপি আত্মবিজ্ঞানের সম্বন্ধে ঐ নিয়ম খাটে না। অন্ত সমস্ত বিষয়ের জ্ঞান আপনা হইতে কোন ফল উৎপাদন করে না। যতক্ষণ উক্তজ্ঞান কোন কার্য্যে লাগান না যায় ততক্ষণ জ্ঞান থাকা আর না থাকা সমান। কিন্তু ব্ৰহ্মজ্ঞান হইবামাত্র অবিদ্যা আপন হইতেই ধ্বংস প্রাপ্ত হয় এবং
পাতা:সরল বেদান্ত দর্শন.djvu/১৯৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।