পাতা:সরল বেদান্ত দর্শন.djvu/৬১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অষ্টম প্রবন্ধ । 粉> যাহারা ধৰ্ম্মশুদ্ধির আকাঙ্ক্ষা করেন, তাহার প্রত্যক্ষ অনুমান (তর্ক) এবং বিবিধ শাস্ত্র বিশেষরূপে পরিজ্ঞাত হইবেন। যে ব্যক্তি বেদশাস্ত্রের অবিরোধী তর্কদ্বারা ঋষিগণপ্রদত্ত ধৰ্ম্মোপদেশ গুলির যথার্থ অর্থ অনুসন্ধান করেন, সেই ব্যক্তিই ধৰ্ম্মের যথার্থ তত্ত্ব অবগত হন । যাহারা সেরূপ করেন না, তাহারা ধৰ্ম্মের তত্ত্ব জানিতে পারেন না। বাস্তবিক শাস্ত্রের যথার্থ তত্ত্ব জানিতে গেলে অনেক তপস্যা করিতে হয়। কঠোপনিষৎ বলিয়াছেন— শ্ৰেয়ঃ এবং প্রেয়ঃ পরস্পর পৃথক । তাহারা মনুষ্যকে ভিন্ন ভিন্ন অর্থে প্রবর্তিত করে। যে ব্যক্তি শ্রেয়ঃপথ অবলম্বন করেন র্তাহার মঙ্গল হয় । আর যে ব্যক্তি প্রেয়ঃ গ্ৰহণ করে তাহার পুরুষাৰ্থ বিফল হয়। স্বয়স্তু পরমেশ্বর ইন্দ্রিয়গণের প্রবৃত্তি বহির্মুখী করিয়াছেন। অতএব জীবগণ স্বভাবতঃ বাহ পদার্থ সকলই অবলোকন করিয়া থাকে,অন্তরাত্মাকে দেখে না। কদাচ কোন বিবেকী পুরুষ অমৃতকামী হইয়া বাহবিষয় হইতে ইন্দ্রিয়গণকে প্রত্যাহার করিয়া আত্মাকে সন্দর্শন করেন। দুশ্চরিত হইতে বিরত, ইন্দ্রিয়লোঁল্য হইতে উপরত, একাগ্রমনা এবং অবিক্ষিপ্তচিত্ত না হইলে মনুষ্য কেবল প্রজ্ঞান দ্বারা আত্মজ্ঞান লাভ করিতে পারে না । উঠ, মোহনিদ্রা বিসর্জন কর, তত্ত্বজ্ঞানবিৎ আচার্য্যের অন্বেষণ করিয়া লও এবং তাহার উপদেশে আত্মতত্ত্ব অবগত হও। স্থল্মতত্ত্বদশী পণ্ডিতেরা বলিয়া থাকেন যে আত্মজ্ঞান সাধনের পথ তীক্ষ ক্ষুরধারের দ্যায় অতি দুর্গম। আত্মা অতি গৃঢ় পদার্থ। তাহার রূপ নাই, রস নাই, গন্ধ নাই, স্পর্শ নাই, শব্দ নাই,আদি নাই, অন্ত নাই, ক্ষয় নাই, বৃদ্ধি নাই, বিকার নাই। তিনি মহত্তত্ব (হিরণ্যগৰ্ভ) অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ, নিত্যবিজ্ঞপ্তিস্বরূপ, সৰ্ব্বসাক্ষী, নিগুণ ব্ৰহ্ম। র্তাহাকে জানিতে পারিলে জীব মৃত্যুর গ্রাস হইতে মুক্ত হয়। কেবল বেদাদিশাস্ত্রপাঠ বা স্বীয়া মেধা বা অপরের উপদেশ শ্রবণ দ্বারা আত্মজ্ঞান হয় না। কিন্তু ভজন দ্বারা ঈশ্বর প্রসন্ন হইয়া যাহাকে অনুগ্রহ করেন তিনিই আপনাকে সেই পরাৎপর আত্মা বলিয়া জানিতে পারেন। १