や8 সরল বেদান্ত দশন । সমষ্টিকে ব্ৰহ্ম বলিয়া স্থির করিলেন এবং পিতা বরুণদেবকে, আপন সিদ্ধান্ত বলিলেন। বরুণদেব আবার বলিলেন, তোমার এখনও ব্রহ্মজ্ঞান হয় নাই, তুমি আরও তপস্যা কর, তপস্যা দ্বারাই ব্ৰহ্ম জানিতে পারিবে। ভৃগুমুনি আবার একাগ্রমনে জগতের মুলকারণ অনুসন্ধান করিতে লাগিলেন। তখন তিনি দেখিলেন, যে একমাত্র বিজ্ঞানও জগতের মূলকরণ হইতে পারে না। বিবিধ পদার্থের এবং তাহীদের কার্য্যকারণের জ্ঞানই বিজ্ঞান। যদি বিবিধ পদার্থ সমন্বিত বাহাজগৎ না থাকে, এবং উক্ত বাহাজগৎ যদি ইন্দ্রিয় শক্তি দ্বারা প্রকাশিত না হয়, তাহা হইলে বিজ্ঞান কোথা হইতে আসিবে ? সুতরাং বিজ্ঞানের মূল বাহাজগৎ ও ইন্দ্রিয়শক্তি। তখন ভৃগুমুনি দেখিলেন যে, তিনি সমস্ত ভূতগণের জন্ম, স্থিতি-ও লয়কারণ অনুসন্ধানের জন্ত বাহ জগৎ ও ইন্দ্রিয় শক্তি হইতে আরম্ভ করিয়া ঘুরিতে ঘুরিতে আবার সেই বাহ জগৎ ও ইন্দ্রিরশক্তিতেই আসিয়া পৌঁছিয়াছেন। তখন তিনি বুঝিতে পারিলেন যে র্তাহার বিচার প্রণালীতে অবশ্য কোন ভ্রম হইয়াছে। কেন না যেমন প্রথমে বৃক্ষ হইতে ফলের উৎপত্তি হইয়াছে, কিম্বা প্রথমে ফল হইতে বৃক্ষ জন্মিয়াছে, ইহার সিদ্ধান্ত অনুমানগম্য হইতে পারে না, সেইরূপ বহিজগৎ, ইন্দ্রিয়শক্তি, মন ও বিজ্ঞানের মধ্যে কোন টা মূলকরণ তাহাও অনুমানগম্য নহে। তখন তিনি পিতার উপদেশগুলি আলোচনা করিয়া দেখিলেন যে, শরীর, প্রাণ, ইন্দ্রিয়, মন, এবং বাক্যকে তাহার পিতা ব্রহ্মোপলব্ধির দ্বারস্বরূপ বলিয়াছিলেন । তাহীদের মধ্যে তিনি শরীর প্রাণ ইন্দ্রিয় এবং মন পরীক্ষা করিয়াছেন, কিন্তু এখনও তিনি বাক্য পরীক্ষা করেন নাই। অনন্তর মন্ত্ৰদশী ঋষিগণের তপঃপ্রভাবে ঈশ্বরানুগ্রহে উক্ত ঋষিগণের জ্ঞানপথে উদিত, এবং তদনন্তর তাহাদের মুখনিঃস্থত, শাস্ত্রবাক্য সকল অবলম্বনপূৰ্ব্বক ভৃগুমুনি একমনে স্বষ্টিস্থিতি-লয়-কারণকে চিন্তা করিয়া দেখিতে পাইলেন যে, অচেতনশক্তি-ইন্দ্রিয়শক্তি-মন-বিজ্ঞানের প্রতিষ্ঠ, রূপ-রস-গন্ধ-স্পৰ্শ-শব্দবিহীন,স্বগত-স্বজাতীয়-বিজাতীয়-ভেদরহিত নিৰ্ব্বিকার,
পাতা:সরল বেদান্ত দর্শন.djvu/৭৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।