পাতা:সরস গল্প - বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অভিয়ের অনিজা বকুল মৃদু হাসিল, তাহার মুখে প্ৰশান্তির ছায়াপাত হইল। সে বলিল, খাটুনি কম করব কি করে ভাই। নিজের সংসার, পর তো আর কেউ নয়। একটুকু বিশ্রামের ফুরন্সত নেই। আজ যদি যম আমায় নিতে আসে তাহলে তাকে বলব, একটু বোস, আমার এখনও অনেক কাজ বাকি । চাপা কহিল, বালাই ষাট, ওকি অলক্ষুণে কথা ভাই। বকুল কহিল, আমার আবার লক্ষণ অলক্ষণ! আমি যমের অকাচি । এহেন বকুলকে পাইয়া অভয়ের বিপর্যস্ত সংসারের মধ্যে বেশ একটা সুশৃঙ্খলা দেখা দিয়াছিল। শুধু তাহাঁই নহে, অভয় বকুলকে নিঃশব্দে চুপিচুপি নাকি ভালবাসিয়াও ফেলিয়াছিল। কেন না, যে অভয় বন্ধুদের ফেলিয়া একদণ্ড কাটাইতে পারিত না, সেই কিনা বিবাহের পর সম্পূর্ণ বিপরীত প্ৰকৃতির হইয়। গেল। গৃহকেই সে যথাসর্বস্ব জানিয়া ফেলিল। বন্ধুরা বিদ্রুপ করিতে কসুর করে নাই। বলিল, বৌদি তোকে এমন করে তুক করে ফেলবে জানলে কখনও বিয়ে করতে দিতুম না। কেহ বলিল, বৌদির দেওয়া খাবার-টাবার দেখে খাস বাবা। কেহ বলিল, কামরূপ-কামিথ্যের ভেড়া হয়ে যাস নে যেন। অভয় কেবল হাসিতে লাগিল। কাহারও কথায় সে জবাব ळ्लि । । এমনি করিয়া অভয়ের দিন ক্লাটিতে লাগিল। বন্ধুরা ধীরে ধীরে তাহার নিকট হইতে সরিয়া যাইতে লাগিল। ধীরে ধীরে তাহাকে সকলে বিস্মৃত হইল। আপিসের ছুটি হইলে সন্ধ্যায়, বা রবিবারে, কেহ তাহার বাড়ী আর তাস পাশা খেলিতে আসিত না। তাহার বহুদিনের বৈঠকখানা অনাদৃত হইয়া পড়িয়া রহিল। সন্ধ্যায় আলো জ্বলিল না, বৈকালে বাট পড়িল না, অভয় হাফ ছাড়িয়া বঁচিল । বকুল S.