পাতা:সহরতলি (দ্বিতীয় পর্ব্ব) - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভচহুৱতী পৰ্য্যন্ত কাটিয়া পায়ের খানিকটা বাদ দেওয়ার প্রয়োজন হওয়াও আশ্চৰ্য্য নয়, সামান্য আঁচড় লাগিয়াও সময় সময় ওরকম হয় । কিন্তু সেটা যে বেশ হয়, ধনঞ্জয়ের সঙ্গে তারও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের একটা সামঞ্জস্য ঘটিবে শুধু এই জন্যই, এরকম ছেলেমানুষী কথা যশোদার মুখে মানায় না । কথাটা সে বলে রীতিমত আবেগের সঙ্গে, যেটা তার পক্ষে আরও বেশী অস্বাভাবিক, সেইজন্য মনে হয় সে যেন তামাসা করিতেছে । ধনঞ্জয় খানিকক্ষণ স্তব্ধ হইয়া থাকে । “আমার সঙ্গে তামাসা করছি চাদের মা ?” শুনিয়া সঙ্গে সঙ্গে শান্ত ও গঙ্গীব হইয়া যশোদা বলে, “না, তামাসা করিনি। মনটা ভাল নেই। কিনা, তাই কি বলতে কি বলেছি। বাড়ী-ভরা লোক ছিল আমার, তুমি ছাড়া আজ কেউ নেই, কি আদেষ্ট বলত আমার ? চোখ দিয়া জল গড়াইয়া পড়ে যশোদার, আর বিহবিলের মত তাই দেখিতে থাকে ধনঞ্জয় । যশোদার মুখ সে গম্ভীর চাইতে দেখিয়াছে, সহানুভূতিতে কোমল হইতেও দেখিয়াছে, কিন্তু সে মুখে বিষন্নতা কি কোনদিন নজরে পড়িয়াছিল তার ? যশোদা যে কঁাদিতে পারে, আর দশজন সাধারণ স্ত্রীলোকের মত দুঃখে জল আসিতে পারে তারও চোখ, কেবল ধনঞ্জয় নয়, যশোদাকে যারা চেনে তাদের প্রায় সকলের পক্ষেই এটা কল্পনা করাও কঠিন ছিল। শূন্য বাড়ীতে শূন্য ঘরে খালি তক্তপোষের দুই প্ৰান্তে দু’জনে বসিয়া ছিল ৷ তক্তপোষের বিছানাপত্ৰ গুটিাইয়া বঁাধিয়া ফেলা হইয়াছে। ঘরের জিনিষপত্র যশোদা পা জখম হওয়ার আগেই রোয়াকে টানিয়া নিয়া গিয়াছে। ধনঞ্জয় সরিয়া সরিয়া যশোদার গা ঘেষিয়া আসিয়া বসিল, SS