পাতা:সাধনা (তৃতীয় বর্ষ, দ্বিতীয় ভাগ).djvu/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এবং উদরাভ্যস্তরে মাতৃগণ অর্থাৎ গঙ্গা সিন্ধু ও যমুনা অবস্থিতি করেন । । ইহাই ব্রাহ্মণের সচরাচর পূজানুষ্ঠান-পর্বোৎসব ইহা আরও জটিল হইয় উঠে। সেই ব্রাহ্মণধর্মের আদিম মহা-যুগ হইতে ব্রাহ্মণধৰ্ম্ম এখনও পর্য্যন্ত একই ভাবে আছে। কোন কোন अन्नुट्टैॉन পরিবর্তিত হইয়া থাকিতে পারে, কিন্তু সকল্যে তখনকারই মত কঠিন শাসন ও অনুষ্ঠানের অতি প্রাচুর্য্য এখনও বিদ্যমান। তখনকার উপনিষদের মধ্যেও সেই উচ্চারিত-বাক্যমাহাষ্মো বিশ্বাস —সেই একই অকাট্য অসংখ্য অনুশাসন—সেই একই অশ্রাতপূৰ্ব্ব মন্ত্র, সেই একই প্রকার অদ্ভূত অঙ্গভঙ্গীর নিয়ম দেখিতে পাওয়া যায়। পঞ্চবিংশতি শতাব্দিরও পূর্ব হইতে (কেন না, বৌদ্ধধৰ্ম্ম এই সকল অনুষ্ঠানের কঠোরতা ও বাতুলতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদস্বরূপ) সেই পঞ্চবিংশতি শতাব্দিরও পূৰ্ব্ব হইতে, এই হিন্দুজাতি অনুষ্ঠানের জটিলতার মধ্য দিয়া যন্ত্রবৎ ক্রমাগত চলিয়া এমন মানসিক বৈরূপ্যে--এমন এক প্রকার মানসিক অভ্যাসে উপনীত হইয়াছে যাহা আমাদিগের হইতে সম্পূর্ণ তফাৎ-এত তফাৎ যে, ঐ সকল অনুষ্ঠান আমাদের ধারণার অতীত। এক জন নিগ্রোর সহিত –“আগুণ ডাঙ্গা”-দেশের একজন অসভ্য লোকের সহিত বরং আমাদের অপেক্ষাকৃত অধিক সাদৃশু আছে। তাহার। অবশু ভীমানিলের অপেক্ষ সাদাসিধা-পশুজাতির সহিত তাহাঁদের অপেক্ষাকৃত নিকটতর সম্বন্ধ, কিন্তু তথাপি দেখিতে পাইবে, সকল অসভ্যজাতি-সুলভ অনেকগুলি সহজ সংস্কার আমাদের আত্মার গভীরতম অন্তরতম দেশে নিহিত ও এখনও পর্য্যন্ত জীবন্তভাবে বৰ্ত্তমান। পক্ষান্তরে,হিন্দুর আত্মা আমাদেরই দ্যায় স্থপরিপুষ্ট, হিন্দুর উদ্ভিজ্জ-সমৃদ্ধি আমাদেরই ন্যায় বিপুল ; প্রভেদ এই, উহু । বারাণসী। # * অত্যাশ্চৰ্য্য ও অসাধারণ। হিন্দুদিগের জটিল সংস্কার-অরণ্যের মধ্যে প্রবেশ করিলে একেবারে হতবুদ্ধি হইয়া যাইতে হয় - উহাদের ংস্কার সকল আমাদের চক্ষে অসম্বদ্ধ প্রলাপ ও নিতাস্ত অসঙ্গত বলিয়া মনে হয় –কিন্তু ঐ সকল সংস্কারই হিন্দু আত্মার স্থায়ী উপদান। আর একটা ব্যাপার বর্ণভেদ। কুকুর ও ষাড়ের মধ্যে যে প্রভেদ, শূদ্র ব্রাহ্মণের মধ্যে সেই ধরণের প্রভেদ। সেই জন্ত, বিভিন্ন বর্ণের মধ্যে বিবাহ ব্যবহার একেবারে নিষিদ্ধ - এমন কি, ইহার কল্পনা পৰ্য্যন্ত ভয়াবহ। অধুনা, যতপ্রকার জীবিকা-বৃত্তি, তত প্রকার জাতিভেদ। প্রত্যেক হিন্দু পুরোহিত কিম্বা ভিষক, লেখক কিম্বা কুম্ভকার, কৰ্ম্মকার কিম্বা খোদনকার হইয়া একেবারেই জন্মগ্রহণ করে। যদি নিকৃষ্টতর বর্ণের কেহ উচ্চতর বর্ণের। লোকের খাদ্য স্পর্শ করে কিম্বা তাহার পাশ্বে বসিয়া আহার করে তাহা হইলে সেই উচ্চতর জাতির লোক অধঃপাতে যায়। যদি কেহ, ভারতভূমি পরিত্যাগ করিয়া বিদেশে যায়, কালাপাণি পার হয়, তবে সে জাতিচু্যত হয়। অর্থাৎ কাহারও সহিত সে কেনা-বেচা করিতে পারে না, আহার ব্যবহারও করিতে পারে না—সে পতিত কলঙ্কিত। চরম প্রায়শ্চিত্ত— গোসংস্রবযুক্ত প্রায়শ্চিত্ত ভিন্ন সে কলঙ্ক মোচন হুইবার নহে! বহুল অর্থ ব্রাহ্মণদিগকে দান করিয়া, স্বকীয় বর্ণের জাতভাইদিগকে একত্র করিয়া- গোদুগ্ধ, মাখন, গোমূত্র ও গোময় এই সকল গব্য পদার্থের মণ্ড প্রস্তুত করিয়া গলাধঃকরণ করিতে হয়। কারণ, গোজাতি, ভগবানের উচ্চতম অবতারবিশেষ, তাহার পদবী ব্রাহ্মণের নীচে, কিন্তু অন্তান্ত তাবৎ মনুষ্যমণ্ডলীর উপরে। গোময় অপেক্ষামূল্যবান পদার্থ আর কিছুই নাই। মে ভক্তজনের গৃহ গোময়লিপ্ত, ভূত প্রেত তাহার ত্রিসীমায় আসিতে FT || *. *