পাতা:সাধনা (তৃতীয় বর্ষ, দ্বিতীয় ভাগ).djvu/২০৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

E on 5 সাধনা ৷ সম্ভাবনা। তাহাদিগের বাধ্য হইয়া কপটতা ও ভণ্ডামির আশ্রয় লইতে হয়। ফরাসীদিগের মধ্যে অনেকেই খৃষ্টধৰ্ম্মে অবিশ্বাসী— । অনেক অজ্ঞেয়বাদী। আসল কথা, শুধু বক্ত তায় নীতিশিক্ষা হয় | না। আর এক কথা, কি ইংলণ্ড কি ফ্রান্স উভয় দেশের বালকেরা যখন দেখে, ভিন্ন দেশের সহিত ব্যবহারে রাজ্যের প্রধান ব্যক্তিগণ নীতিরক্ষা করিয়া চলেন না, দুৰ্ব্বল জাতিকে অকারণে । আক্রমণ ও উৎপীড়ন করেন তখন বালকদিগের নীতিশিক্ষা কি করিয়া হইবে ? চিন্তাশীল ইংরাজ ও ফরাসীরা বলেন, আজকাল একটা সৰ্ব্ববাদিসম্মত নৈতিক শাসনের নিতান্ত প্রয়োজন হই য়াছে। গ্রন্থকারের মতে, প্রবল লোক-মত সেই শাসন-ভার গ্রহণ করিতে পারে। এখন যে সমাজ-শাসন আছে তাহ কেবল বাহিক অনুষ্ঠান লইয়া দণ্ড পুরস্কার বিতরণ করিয়া থাকে। জনসাধী রণের এরূপ প্রবল মত হওয়া চাই, যাহাতে তাছার দ্বারা আত্ম বিসর্জন, মিতাচার, সরলতা প্রভৃতি প্রকৃত সদগুণের পোষণ ও উৎসাহ বৰ্দ্ধন হইতে পারে। তাহার একটা দৃষ্টাস্ত যেমন, ফরাসী দিগের মধ্যে টাকা ধার করা নিতান্ত লোক-মতবিরুদ্ধ। এই মতটি জনসমাজে প্রবল থাকায়, ফরাসীরা বিশেষতঃ মফস্বল বালী ফরাসীরা আদপে অতিব্যয়ী হয় না- আপন আপন আর্থিক অবস্থা অনুসারে সকলে সাদাসিধাভাবে জীবনযাত্র। নিৰ্ব্বাহ করে। আর এক দৃষ্টান্ত, মার্কিন জাতির মধ্যে, ধনী হইলেও অলস झुङ्गे,ु ন। এই মতটি জনসাধারণের মধ্যে বদ্ধমূল এবং উচ্চশ্রেণীর ইংরাজী দিগের মধ্যে এই লোকমতটি প্রবল যে, সৰ্ব্বপ্রকার অভদ্রত সৰ্ব্বথা বর্জনীয়। এই প্রকার প্রবল লোকমত অনেক সশ জনসমাজের প্রভূত হিতসাধন করিয়া থাকে। হৃদয়ের শিক্ষা সম্বন্ধে গ্রন্থকার বলেন, জন মিল অনেক দিন ফরাসী ও ইংরাজ । 8é戟 হইল দেখাইয়া দিয়াছেন, ফরাসীদিগের এক বিষয়ে স্ববিধ এই, উহাদের মধ্যে সহৃদয়তার সাধনা হইয়া থাকে। হৃদয়ের ভাব ভাষায় সৰ্ব্বদা প্রকাশ করিবার অভ্যাস রাখিলে, ভাবগুলি ঘে সজাগ থাকে তাহাতে সন্দেহ নাই। অবশু, কখন কখন এই ভাব প্রকাশ মৌখিক হইয়া পড়ে ; কিন্তু সাধারণতঃ উহার দ্বারা প্রকৃত হৃদয়-ভাব পরিব্যক্ত হয়। এই প্রকারে, ভাবের যেন একটা প্রাণবায়ু ফরাসীদিগের চতুৰ্দ্দিকে বিচরণ করিতে থাকে এবং তাহার দ্বার স্বদয়ের কোমল ভাবগুলি সজীব থাকে। ইংরাজের স্বভাবতঃ অত্যন্ত চাপা –উহাদের মধ্যে শ্রেণীভেদ অত্যন্ত প্রবল— উহার কঠোরতাকে গৌরবের বিষয় মনে করে এবং কোন প্রকার কোমল ভাব প্রকাশ করিতে উহার লজ্জা বোধ করে । এই কারণে উহাদের মধ্যে সহৃদয়তার অনুশীলন হয় না। ফরাসীদিগের মাতৃ-অনুরাগ ইংরাজদিগের নিকট হাস্যজনক বলিয়া মনে হয়-পক্ষান্তরে ফরাসীরা এই মাতৃ-অনুরাগকে হৃদয়ের স্বাভাবিক ধৰ্ম্ম বলিয়া মনে করে। বাস্তবিকই কি ইংরাজদিগের কোন সহৃদয়ত নাই ? না, – সহৃদয়তাকে উহার দমাইয়া রাখিতে চেষ্টা করে এক কথায় এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সহজ নহে। হৃদয়ের ভাব বাহিরে প্রকা" করা উহাদের লোকাচারবিরুদ্ধ—সুতরাং সহৃদয়তার অনুশীলন পক্ষে উহাদের লোকাচার অনুকুল নহে। তাই বলিয়া, উইদের সহৃদয়ত একেবারে নাই একথাও বলা যায় না। কঠিন পাষাণ টরের মধ্য দিয়াও ঘাসের শীষ সময়ে সময়ে গজাইয় উঠে। তবে, এ কথা ঠিক, ইংরাজসমাজ সহৃদয়ত-বিকাশের অন্থকুল স্থান নহে। কৰ্ত্তব্য-আচরণে যতটুকু সহৃদয়তার প্রয়োজন, ততটুকু সহৃদয়ত ইংরাজের অাছে—তাহার বেশি নাই। হৰ্ভাগাক্রমে