পাতা:সাধনা (তৃতীয় বর্ষ, দ্বিতীয় ভাগ).djvu/২০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

է ո ե- l সাধনা | এ কথা আমি মানি না। কেন মানি না, তাহার সঙ্গত কারণ আমি দেখাইতেছি। ইংরাজ জাতির দুর্নীতির কথা শুনিলেও আমি যথেষ্ট প্রমাণ না পাইলে তাহা গ্রাহা করি না। “পেলমেল গেজেটের রহস্য প্রকাশ” সম্বন্ধে ইংরাজের চিরশত্র ফরাসীরা বিশ্বাস করিয়াছিল কিন্তু আমি উহার প্রযুক্ত প্রমাণ যথেষ্ট বলিয়া মনে করি না। ফরাসীদিগের দুশ্চরিত্র সম্বন্ধে ইংরাজদিগের যুক্তির দুইটি প্রকরণ এইরূপ দেখা যায়—যথা (১) উপন্যাস-লেখকের সমাজের জীবন্ত ছবি আঁকিয়া থাকে—ফরাসীদিগের লভেলে স্ত্রী পুরুষের ব্যভিচার সংক্রান্ত ঘটনা প্রায়ই থাকে —সুতরাং ফরাসীরা ব্যভিচারপরায়ণ । (২) ফরাসীরা এই সকল ব্যভিচার-ঘটনামূলক নভেল বিস্তর ক্রয় করিয়া থাকে, সুতরাং এই সকল নভে লের পাঠকেরাও ব্যভিচারপরায়ণ। প্রথম প্রকরণটি সম্বন্ধে অামার বক্তব্য এই, সচরাচর এক-ঘেয়ে বাস্তব জীবনে যত না অপরাধের ঘটনা ঘটিয়া থাকে, তদপেক্ষ কাল্পনিক সাহিত্যে সেই সকল ঘটনার কথা অনেক বেশি থাকে। তাহার দৃষ্টান্ত, সচরাচর ইংরাজদিগের বাস্তব জীবনে যাহা দেখা যায়, তাহ অপেশী সেক্সপিয়ারের নাটকে হত্যাকাণ্ডের কথা বেশি পাওয়া যায়। এমন কি, যে সকল উপন্যাস নিতান্ত নির্দোষ ও বালকের পাঠ্য বলিয়। বিবেচিত হয়, যথা, আরব্য-উপন্যাস’, ‘রবিনসন ক্রুসো' এবং আধুনিক ষ্টিভেনসন প্রণীত “ঐশ্বৰ্য-ভাণ্ডার দ্বীপ’–এই সকল গ্রন্থও শঠতা ও নরহত্যার ব্যাপারে পূর্ণ— কেবল পাঠকের ঔৎসুক্য উত্তেজন করিবার উদ্দেশে এই সকল ঘটনা উহাতে সরি বেশিত হইয়াছে। । বাস্তব জগৎ উপন্যাসিক জগতের মত হইবেই হইবে এই যে যুক্তি—অন্য দিক্ দিয়া দেখিলেও—ইহার হীনতা উপলব্ধি হইবে । নভেল-লেখকের স্বল্প চরিত্র অপেক্ষ বাস্তব অস্তুর্যামী । 8 - సె জগতের লোক সংখ্যা অনেক বেশি একথা কে না স্বীকার করিবে ? অতএব যদি বাস্তব জগৎ হইতেই উপন্যাসের চরিত্র সকল গৃহীত হইয়া থাকে, তাহা হইলে এইমাত্র প্রমাণ হয়, চিকিৎসা-শিক্ষার্থীরা যেমন মোটের উপর কোন স্বাস্থ্যজনক পল্লী হইতে রোগীর দৃষ্টান্ত সংগ্রহ করে, সেইরূপ এই সকল উপন্যাস-লেখকের সাধারণতঃ নিরপরাধী সমাজ হইতেই অপরাধকাও সংগ্ৰহ করিয়া থাকে। কিন্তু আসল কথা, উপন্যাস লেখকের বাস্তব জীবন হইতে ঘটনা সকল সচরাচর সংগ্রহ করে না—প্রায়ই উহার প্রকৃতির আদর্শে চরিত্রগুলি রচনা করিয়া থাকে এবং ঘটনা ও অবস্থানগুলি প্রায়ই স্বকপোলকল্পিত।” গ্রন্থকার আরও অনেক বিষয়ে ইংরাজ ও ফরাসীর মধ্যে তুলনা করিয়া দেখাইয়াছেন, সে সকল বিষয়ের উল্লেখ করিলে প্রবন্ধের আয়তন অত্যন্ত দীর্ঘ হইয়া পড়ে স্বতরাং এইখানেই শেষ করা গেল। অন্তর্ষামী । এ কি কৌতুক নিত্য-নূতন ওগো কৌতুকময়ী ! আমি যাহা কিছু চাহি বলিবারে বলিতে দিতেছ কই ? অন্তরমাঝে বসি অহরহ মুখ হতে তুমি ভাষা কেড়ে লহ, মোর কথা লয়ে তুমি কথা কই মিশায়ে আপন স্বরে।