পাতা:সাধনা (তৃতীয় বর্ষ, দ্বিতীয় ভাগ).djvu/২১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাধনা ৷ এই সকল ছড়ার মধ্যে একটি চিরত্ব আছে। কোনটির কোন কালে কোন রচয়িত ছিল বলিয়া পরিচয় মাত্র নাই এবং কোন শকের কোন তারিখে কোনটা রচিত হইয়াছিল এমন প্রশ্নও কাহা । রও মনে উদয় হয় না। এই স্বাভাবিক চিরত্বগুণে ইহারা আজ { রচিত হইলেও পুরাতন এবং সহস্ৰ বৎসর পূৰ্ব্বে রচিত হইলেণ্ড । o দেখিতে গেলে শিশুর মত পুরাতন আর কিছুই নাই। দেশকার শিক্ষা প্রথা অনুসারে বয়স্ক মানবের কত নুতন পরিবর্তন হইয়াছে কিন্তু শিশু শত সহস্ৰ বৎসর পূৰ্ব্বে যেমন ছিল আজও তেমনি আছে ; সেই অপরিবর্তনীয় পুরাতন বারম্বার মানবের ঘরে শিশু মূৰ্ত্তি ধরিয়া জন্মগ্রহণ করিতেছে, অথচ সৰ্ব্বপ্রথম দিন সে যেমন নবীন যেমন স্বকুমার যেমন মুঢ় যেমন মধুর ছিল আজও ग्लिश তেমনি আছে। এই নবীন চিরত্বের কারণ এই যে, শিশু প্রকৃতির স্বজন ; কিন্তু বয়স্ক মানুষ বহুল পরিমাণে মাহুষের নিজকৃত রচনা। তেমনি ছড়াগুলিও শিশু-সাহিত্য – তাহারা মানব-মনে আপনি জন্মিয়াছে। আপনি জন্মিয়াছে এ কথা বলিবার একটু বিশেষ তাৎপর্য আছে —স্বভাবতঃ আমাদের মনের মধ্যে বিশ্বজগতের প্রতিবিম্ব এবং প্রতিধ্বনি ছিন্নবিচ্ছিন্নভাবে ঘুরিয়া বেড়ায়। তাহার বিচিত্র রূপ ধারণ করে এবং অকস্মাৎ প্রসঙ্গ হইতে প্রসঙ্গাস্তরে গিয়া উপনীত হয়। যেমন বাতাসের মধ্যে পথের ধূলি, পুষ্পের রেণু, অসংখ্য গন্ধ, বিচিত্র শব্দ, বিচ্ছিন্ন পল্লব, জলের শীকর, পৃথিবীর বাষ্প,--এই আবৰ্ত্তিত আলোড়িত শ্লগতের বিচিত্র উৎক্ষিপ্ত উভট্টান খণ্ডাংশ সকল-সৰ্ব্বদাই গ্রিকভাবে ঘুরিয়া ফিরিয়া H মেয়েলি ছড়া । 않 বেড়াইতেছে আমাদের মনের মধ্যেও সেইরূপ। সেখানেও আমাদের নিত্যপ্রবাহিত চেতনার মধ্যে কত বর্ণ গন্ধ শব্দ, কত কল্পনার বাষ্প, কত চিন্তার আভাস, কত ভাষার ছিন্ন খণ্ড, আমাদের ব্যবহার জগতের কত শত পরিত্যক্ত বিস্কৃত বিচু্যত পদার্থসকল অলক্ষিত অনাবশ্যক ভাবে ভাসিয়া ভাসিয়া বেড়ায়। যখন আমরা সচেতন ভাবে কোন একটা বিশেষ দিকে লক্ষ্য করিয়া চিন্তা করি তখন এই সমস্ত গুঞ্জন থামিয়া যায়, এই সমস্ত রেণু-জাল উড়িয়া যায়, এই সমস্ত ছায়াময়ী মরীচিকা মুহূর্তের মধ্যে অপসারিত হয়, আমাদের কল্পনা, আমাদের বুদ্ধি একটা বিশেষ ঐক্য অবলম্বন করিয়া একাগ্রভাবে প্রবাহিত হইতে থাকে । আমাদের মন নামক পদার্থটি এত অধিক প্রভূত্বশালী যে, সে যখন সজাগ হইয়া বাহির হইয়া আসে, তখন তাহার প্রভাবে আমাদের অন্তর্জগৎ এবং বহির্জগতের অধিকাংশই সমাচ্ছন্ন হইয়া যায়-তাইরই শাসনে, তাহারই বিধানে, তাহারই কথায়, তাহারই অনুচর পরিচরে নিখিল সংসার আকীর্ণ হইয়া থাকে। ভাবিয়া দেশ, মিলিত ধ্বনি, ছোট বড় কত সহস্র প্রকার কলশব্দ নিরন্তর ধ্বনিত ইতেছে, এবং আমাদের চতুৰ্দ্দিকে কত কম্পন কত আন্দোলন, কত গমন কত আগমন, ছায়ালোকের কতই চঞ্চল লীলা প্রবাহ প্রতিনিযুত আবৰ্ত্তিত হইতেছে,—অথচ তাহীর মধ্যে কতই যৎসামান্ত অংশ আমাদের গোচর হইয় থাকে ; তাহার প্রধান কারণ এই যে, ধীবরের ন্যায় আমাদের মন ঐক্য-জাল ফেলিয়া একেবারে একক্ষেপে যতখানি ধরিতে পারে সেইটুকু গ্রহণ করে, বাকি গণ স্তই তাহাকে এড়াইয়া যায়, সে যখন দেখে তখন ভাগ ক"ি শানে না, যখন শোনে তখন ভাল করিয়া দেখে না, এবং সে