পাতা:সাধনা (তৃতীয় বর্ষ, দ্বিতীয় ভাগ).djvu/২৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

saw - সাধনা ৷ - পিসি কাদেন পিসি কাদেন গোয়ালে বসিয়ে । সেই যে পিসি দুধ দিয়েছেন বাটি সাজিয়ে ॥ ভাই কাদেন ভাই কাদেন আঁচল ধরিয়ে । সেই যে ভাই কাপড় দিয়েছিলেন আল্‌না সাজিয়ে ॥ বোন কাদেন বোন কাদেন খাটের খুরো ধরে। து সেই যে বোন – o এইখানে, পাঠকদিগের নিকট অপরাধী হইবার আশঙ্কায় ছড়াটি শেষ করিবার পূৰ্ব্বে দুই একটি কথা বলা আবশ্যক বোধ করি। যে ভগিনীটি আজ খাটের খুর। ধরিয়া দাড়াইয়া দাড়াইয়া অজস্র অশ্রমোচন করিতেছেন তাহার পুৰ্ব্বব্যবহার কোন ভদ্রকল্লার অনুকরণীয় নহে। বোনে বোনে কলহ না হওয়াই ভাল, তথাপি সাধারণতঃ এরূপ কলহ নিত্য ঘটিয়া থাকে। কিন্তু তাই বলিয়া কন্থাটির মুখে এমন ভাষা ব্যবহার হওয়া উচিত হয় না যাহা আমি অদ্য ভদ্রসমাজে উচ্চারণ করিতে কুষ্ঠিত বোধ করিতেছি। তথাপি সে ছত্রটি একেবারেই বাদ দিতে পারিতেছি না। কারণ, তাহার মধ্যে কতকটা ইতর ভাষা আছে বটে কিন্তু তদপেক্ষ অনেক অধিক পরিমাণে বিশুদ্ধ করুণরস আছে। ভাষান্তরিত করিয়া বলিতে গেলে মোট কথা এই দাড়ায় যে, এই রোরুদ্যমান বালিকাটি ইতিপূৰ্ব্বে কলহকালে তাহার সহোদরাকে ভর্তৃথাদিক বলিয়। অপমান করিয়াছেন । আমরা সেই গালিটিকে অপেক্ষাকুত অনতিরূঢ় ভাষায় পরিবর্তন করিয়া নিয়ে ছন্দ পূরণ করিয়া দিলাম। - বোন কাদেন বোন কাদেন খাটের খুরো ধরে। সেই যে বোন গাল দিয়েছেন স্বামীথাকী বলে ॥ মা অলঙ্কার দিয়াছেন, বাপ অর্থ দিয়াছেন, মাসী ভাত খাওয়াই মেয়েলি ছড়া। 骼就嵩 মাছেন, পিসি দুধ খাওয়াইয়াছেন, ভাই কাপড় কিনিয়া দিয়াছেন ; আশা করিয়াছিলাম এমন স্নেহের পরিবারে ভগিনীও অনুরূপ কোন প্রিয়কাৰ্য্য করিয়া থাকিবেন। কিন্তু হঠাৎ শেষ ছত্রট পড়িয়াই বক্ষে একটা আঘাত লাগে এবং চক্ষুও ছলছল করিয়া উঠে। মা বাপের পূর্বতন স্নেহব্যবহারের সহিত বিদায়কালীন রোদনের একটা সামঞ্জস্য আছে—তাহ প্রত্যাশিত ৷ কিন্তু যে ভগিনী সৰ্ব্বদা ঝগড়া করিত এবং অকথ্য গালি দিত, বিদায়কালে তাহার কান্না যেন সবচেয়ে সকরুণ! হঠাৎ আজ বাহির হইয়া পড়িল যে, তাহার সমস্ত দ্বন্দ্ব কলহের মাঝখানে একটি স্বকোমল স্নেহ গোপনে সঞ্চিত হইতেছিল - সেই অলক্ষিত স্নেহ সহসা স্থতীব্র অনুশোচনার সহিত আজ তাহাকে বড় কঠিন আঘাত করিল। সে খাটের পুৱা ধরিয়া কাদিতে লাগিল । বাল্যকালে এই এক থাটে তাহারা দুই ভগিনী শয়ন করিত, এই শয়নগৃহই তাছাদের সমস্ত কলহ বিবাদ এবং সমস্ত খেলাধূলার লীলাক্ষেত্র ছিল । বিচ্ছেদের দিনে এই শয়ন-ঘরে আসিয়া, এই থাটের খুৱা ধরিয়া নির্জনে গোপনে দাড়াইয়া ব্যথিত বালিকা যে ব্যাকুল অশ্রুপাত করিয়াছিল, সেই গভীর স্নেহ-উৎসের নিৰ্ম্মল জলধারায় কলহভাষার সমস্ত কলঙ্ক প্রক্ষালিত হইয়া শুভ্ৰ হইয়া গিয়াছে। এই সমস্ত ছড়ার মধ্যে একটি ছত্রে একটি কথায় স্থখহুঃখের এক-একটি বড় বড় অধ্যায় উহ রহিয়া গিয়াছে। নিয়ে যে ছড়াটি উদ্ধত করিতেছি তাহার ছই ছত্রে প্রাচীন কাল হইতে আদ্যকাল পৰ্য্যন্ত বঙ্গীয় জননীর কত দিনের শোকের ইতিহাস ব্যক্ত হই য়াছে ! দোল দোল জুলুনি। রাঙ। স্নাথায় চিরুনি ॥ 離|