:ச সাধনা ৷ ” থোকাবাবু “বেড় করেন। উহাতে খোকাবাবুর ' বেড়ানটি একটু বিশেষ স্বতন্ত্র এবং স্নেহাস্পদ পদার্থরূপে প্রকাশ পায়। থোকা এল বেড়িয়ে । দুধ দাও গো জুড়িয়ে ॥ দুধের বাটি তপ্ত । து থোকা হলেন ক্ষ্যাপ্ত ৷ খোকা যাবেন নায়ে। লাল জুতুরা পায়ে । । অবশু, থোকা বাবু ভ্রমণ সমাধা করিয়া আসিয়া দুধের বাটি দেখিয়৷ ক্ষিপ্ত হইয়া উঠিয়াছেন সে ঘটনাটি গৃহরাজ্যের মধ্যে একটি বিষম ঘটনা, এবং তাহার, যে, নৌকারোহণে ভ্রমণের সংকল্প আছে ইহাও ইতিহাসে লিপিবদ্ধ করিয়া রাখিবার যোগ্য, কিন্তু পাঠকগণ শেষ ছত্রের প্রতি বিশেষ লক্ষ্য করিয়া দেখিবেন। আমরা যদি সৰ্ব্বশ্রেষ্ঠ ইংরাজের দোকান হইতে আজানুসমুথিত বুট কিনিয়া অত্যন্ত মচ্মচ্ শব্দ করিয়া বেড়াই তথাপি লোকে তাহাকে জুতা অথবা জুতি বলিবে মাত্র । কিন্তু খোকা বাবুর অতি ক্ষুদ্র কোমল চরণযুগলে ছোট ঘুণ্টি-দেওয়া অতি ক্ষুদ্র সামান্ত মূল্যের রাঙা জুতাযোড়া সেটা হইল জুতুয়া ! স্পষ্টই দেখা যাইতেছে জুতার আদরও অনেকটা পদসম্ভমের উপরেই নির্ভর করে, তাহার অন্য মূল কাহারও খবৰেই আসে না । সৰ্ব্বশেষে, উপসংহারকালে আর একটি কথা লক্ষ্য করিয়া দেখিবার অাছে। যেখানে মানুষের গভীর স্নেহ, অকৃত্রিম প্রীতি সেইখানেই তাহার দেবপূজা। যেখানে আমরা মানুষকে ভাল বাসি সেইখানেই আমরা দেবতাকে উপলব্ধি করি। ঐ যে বল হইয়াছে "নিরলে বসিয়া চাদের মুখ নিন্ধখি” ইহা দেবতারই ধ্যান । - | E মিশিয়া আপনি আসিয়া দাড়াইতেছেন। মেয়েলি ছড়া । শিশুর ক্ষুদ্র মুখখানির মধ্যে এমন কি আছে যাহা নিরীক্ষণ করিয়৷ দেখিবার জন্ত, যাহা পরিপূর্ণরূপে উপলব্ধি করিবার জন্ত অরণ্যের নিরালার মধ্যে গমন করিতে ইচ্ছা হয়, মনে হয়, সমস্ত সংসার, সমস্ত নিত্যনৈমিত্তিক ক্রিয়াকৰ্ম্ম এই আনন্দভাণ্ডার হইতে চিত্তকে দিক্ষিপ্ত করিয়া দিতেছে! যোগীগণ যে অমৃত-লালসায় পানাহার ত্যাগ করিয়! অরণ্যের মধ্যে অক্ষুব্ধ অবসর অন্বেষণ করিতেন, জননী নিজের সস্তানের মুখে সেই দেবদুর্লভ অমৃতরসের সন্ধান প্রাপ্ত হইয়াছেন, তাই তাহার অন্তরের উপসনামন্দির হইতে এই গাথা উচ্ছ,সিত হইয়া উঠিয়াছে— ধনকে নিয়ে বনকে যাব—সেখানে খাব কি । নিরলে বসিয়া চাদের মুখ নিরথি । - সেইজন্য ছড়ার মধ্যে প্রায়ই দেখিতে পাওয়া যায় নিজের পুত্রের সহিত দেবকীর পুত্রকে অনেক স্থলেই মিশাইয়া ফেলা হইয়াছে। অন্ত দেশে মন্থধ্যে দেবতায় এরূপ মিলাইয়া দেওয়া দেবাপমান বলিয়া গণ্য হইত। কিন্তু আমার বিবেচনায় মন্থয্যের উচ্চতম মধুরতম গভীরতম জীবন্ত সম্বন্ধসকল হইতে দেবতাকে স্থদুরে স্বতন্ত্র করিয়া রাখিলে মন্নুষ্যত্বকেও অপমান করা হয়, এবং দেবত্বকেও সন্মান করা হয় না। আমাদের ছড়ার মধ্যে মৰ্ত্তোর শিশু স্বর্গের দেবপ্রতিমার সঙ্গে যখন-তখন এক হইয়া যাইতেছে – সেও অতি সহজে অতি অবহেলে--তাহার জন্ত স্বতন্ত্র চালচিত্রেরও অবিশুক হইতেছে না। শিশু-দেবতার অতি অদ্ভুত অসঙ্গত অর্থহীন চালচিত্রের মধ্যেই স্বর্গের দেবতা কখন অলক্ষিতে শিশুর সহিত খোকা যারে বেড় করতে তেলিমালিদের পাড়। তেলিমালিরা মুখ করেছে কেন্রে মাখনচোরা ।
o