পাতা:সাধনা (তৃতীয় বর্ষ, দ্বিতীয় ভাগ).djvu/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SS SeeSS SeeTT TTTTS TTTT TTTTTATT "ు . সাধনা 1 যোগ-বলে দিব্যজ্ঞান লাভ। সাধক পরমাত্মার সহিত আত্মার সাক্ষাৎভাবে যোগ সাধন করিয়া, অভূতপূৰ্ব্ব আনন্দের উচ্ছাসে আত্মহারা হইয়া, লৌকিক জ্ঞানের অতীত এমন সকল আধ্যাত্মিক জগতের সত্য উপলব্ধি করেন, যাহা সচরাচর বুদ্ধি জ্ঞানের একে বারেই অগম্য। - " . এই তিন শ্রেণীর দৈবজ্ঞান লাভের উপায় পৰ্য্যালোচনা করিয়া দেখিলে দেখা যায়, এক এক ধাপ করিয়া যেন উন্নতির সোপান উঠিয়াছে —উত্তরোত্তর যেন অধিকতর মার্জিতভাব ধারণ করিয়াছে। আজকাল দেবতার প্রত্যক্ষ দর্শন লাভ কিম্বা প্রলাপোক্ত দৈববাণীর সত্যত সম্বন্ধে শিক্ষিত লোকেরা বড় বিশ্বাস করেন না। যে ব্যক্তি বলে আমি দেবতাকে চাক্ষুষ দেখিয়াছি কিম্বা দৈববাণী শুনিয়াছি, তাহাকে পাগল বলিয়াই লোকে উড়াইয়া দেয়। কেবল যোগসিদ্ধ দৈবজ্ঞানের বিষয় স্বসভ্য দেশের শিক্ষিত লোকেরাও অনেকে বিশ্বাস করেন । 退。 এই যোগসিদ্ধ দৈবজ্ঞান বা আপ্তজ্ঞানের আসল ভাবটা কি ? আধ্যাত্মিক জগতের সত্য জানিবার পক্ষে ইহাই কি নিশ্চিত উপায় —প্রকৃষ্ট সাধন ? গোড়ায় এই কথাটি যেন আমাদের স্মরণ থাকে, যে, এই প্রকার দৈবজ্ঞান লাভ, কোন জাতিবিশেষের বা ধৰ্ম্মসম্প্রদায়বিশেষের নিজস্ব অধিকার নহে। কি ব্রাহ্মণ, কি মুসলমান, কি বৌদ্ধ, কি খৃষ্টান, সকল ধৰ্ম্মের উপাসকেরাই এই সাধনপদ্ধতিটি অবলম্বন করিয়াছেন। শরীর হইতে—বহির্জগৎ হইতে মনকে প্রত্যাহরণ করিয়া কিরূপে ঈশ্বরের সহিত সাক্ষাৎভাবে যোগনিবদ্ধ করিতে পারা যায়, সকলেরই সেই চেষ্টা । ইহার প্রকরণটি এইরূপ ; – কোন বাহ পদার্থের উপর কিম্বা নাসাও নাভিদেশ প্রভৃতি শরীরের অংশবিশেষের উপর দৃষ্টি স্থির রাখিয়া কোন একটি যোগসিদ্ধ জ্ঞান ও যোগানন্দ । : বিশেষ বিষয়ে সুতীব্র দীর্ঘকালব্যাপী তন্ময় চিন্তা-প্রবাহ প্রয়োগ করিতে করিতে সাধকের একপ্রকার আত্মহারা অবস্থা উপস্থিত হয় – তখন জ্ঞান ও বুদ্ধির কার্য্য স্তম্ভিত হইয়া গিয়া, আত্মজ্ঞান লুপ্ত হইয়া মনে হয় যেন জীবাত্মা পরমাত্মাতে একাকার হইয়া তখন সেই ব্রহ্মনিমগ্ন আনন্দময় আত্মার সমক্ষে যে সকল অনিৰ্ব্বচনীয় সত্য প্রকাশ পায়, তাহা যুক্তির শৃঙ্খলানুসারে ক্রমান্বয়ে উপলব্ধি হয় না, পরন্তু একেবারেই মুহূৰ্ত্তের মধ্যে আত্মপ্রত্যয়ের ন্যায় প্রতিভাত হয়। মভূস্লি বলেন—দুর্ভাগ্যের বিষয় এই, এই পদ্ধতি অনুসারে যে আপ্তজ্ঞান বা আপ্তবচন পাওয়া গিয়াছে, তাহ বিভিন্ন ধৰ্ম্ম অনুসারে বিভিন্ন প্রকার। যখন খৃষ্টীয় ধৰ্ম্মাবলম্বীরা সাধন করিয়াছেন তখন খৃষ্টীয় সত্য বাহির হইয়াছে—যখন হিন্দু সাধক সাধনা করিয়াছেন, তখন অন্ত প্রকার সত্য র্তাহার নিকট প্রতিভাত হইয়াছে। সাধকভেদে সাধনার ফল যে বিভিন্ন হইয়াছে তাহ খৃষ্টসম্প্রদায়দিগের মধ্যেই দেখা যায়। সেণ্ট থেরেসা যেরূপ ঈশ্বরদর্শন করিয়াছিলেন, তাহার সহিত সুইডেনবর্গের ঈশ্বরদর্শনের ঐক্য হয় না। ঈশ্বরের ত্রিরূপ সম্বন্ধে উভয়ের মধ্যে পরস্পর-বিরোধী মত, আবার য়ুনিটেরিয়ান সম্প্রদায়ের ভক্ত সাধক যে ঈশ্বর-তত্ত্ব প্রাপ্ত হন তাহাতে খুষ্টের ঈশ্বরত্ব বর্জিত। এই পদ্ধতিটির অসুবিধা এই যে, সত্য মূল উৎস হইতে অবিকৃত ভাবে না আসিয়া সাধকের অবস্থা অনুসারে একটু বিকৃত—একটু কলুষিত হইয়া পড়ে। প্লোটাইনস সৰ্ব্বপ্রথমে খৃষ্টীয়-মণ্ডলীর মধ্যে এই যোগ-সাধন প্রণালী প্ৰবৰ্ত্তিত করেন। হিন্দুদিগের নিকট হইতে র্তাহার যে এই শিক্ষা হইয়াছিল তাহার বিশিষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়। প্লোটাইনস বলেন, জ্ঞানের দ্বারা অনন্তস্বরূপকে জানা যায় না, যেহেতু জ্ঞানের