পাতা:সাধনা (তৃতীয় বর্ষ, প্রথম ভাগ).djvu/১৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

* * iss সাধন । লিথিয়াছেন। প্রথমেই তিনি এই কথা বলিয়াছেন যে, “মুসলমানের কতকগুলি গুরুতর বিষয়ে আমাদিগের অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ।” তাহাদি গের মধ্যে মধ্যবিত্ত ও নিম্নশ্রেণীর লোকেরা “স্বাধীন অথচ পানদোষ বিবর্জিত।” “যদি আমার তুর্কি বন্ধুদিগের কথায় বিশ্বাস করা যায়, তাহা হইলে তাহার তো বলেন, কোন মুসলমান স্ত্রীলোক প্রকাশুভাবে দুর্নীতিপরায়ণ হয় না।” যে ধৰ্ম্ম পানদোষ ও দুর্নীতি এই দুই বিষম রোগ আরাম করিতে পারে সে ধৰ্ম্ম আমাদের শ্রদ্ধার যোগ্য সন্দেহ নাই। অধ্যাপক মহাশয় আরও বলেন “অনেক তর্ক বিতর্কের পর শেষে সাধারণতঃ আমাদিগের স্বীকার করিতে হইল, প্রধান প্রধান বিষয়ে এই উভয় ধৰ্ম্মের মধ্যে অতি অল্পই প্রভেদ, পূর্বে একটা বিবাদ ও মনান্তর না ঘটিলে এই উভয় ধৰ্ম্ম এক হইয়া যাইতে পারিত। তাহারা সকলেই স্বীকার করিলেন যে, কোরাণসম্মত র্তাহাদের ছয়টি প্রধান মত ও বিশ্বাস —ঈশ্বরের একত্ব, এঞ্জেলের অস্তিত্ব, কতকগুলি বিশেষ বিশেষ ঈশ্বর-অনুপ্রাণিত পুস্তকের অস্তিত্ব, বিচারের দিন, এবং ঈশ্বরের আদিষ্ট নিয়মাবলী— এই গুলি যদি মুসলমান ধৰ্ম্মের প্রধান মত ও বিশ্বাস হয়, তাহা হইলে খৃষ্টীয়ধৰ্ম্মের সহিত বিবাদ করিবার কোন কারণ দেখা যায় না। খৃষ্টীয়ান মাত্রেই এই প্রত্যেক মতগুলিতে সায় দিবেন সন্দেহ নাই । গোল বাধে যখন আনির্দেশু বিষয়গুলিকে নির্দিষ্ট ভাবে বিশেষ করিয়া বর্ণনা করা হয়।” মুসলমানের স্বর্গ সম্বন্ধে অধ্যাপক এইরূপ বলেন—“প্রত্যেক ধৰ্ম্মের মানবীকরণমূলক উপমাগুলিকে ধর্তব্যের মধ্যে আনা উচিত নহে ; তা ছাড়া, স্বর্গের স্থখ বর্ণনা করিতে হইলে পার্থিব সুখের অনুরূপে বর্ণনা না করিলে চলে না। তুতএব পার্থিব মুখের চরম মুখ সেই যে স্ত্রীপুরুষের বন্ধুত্ব (যদি স্বর্গে জাঁ । সামরিক সারসংগ্ৰহ। । ৪৩৩ পুরুষভেদ থাকে) সেই বন্ধুত্বের সুখকে তবে কেন পরলোক হইতে বহিস্কৃত করা হয় ? যদি মহম্মদ রতন কাঞ্চন অপেক্ষা স্ত্রীলোকের সৌন্দৰ্য্যকে উচ্চতর মনে করিয়া থাকেন তাহা হইলে তাহাকে কেন দোষ দেওয়া হয় ? লোকে মনে করে, যেন মহম্মদ স্বর্গের আর কোনও সুখের কথা জানিতেন না, তাই সুন্দরীদিগের অন্তঃপুর বলিয়া স্বর্গকে বর্ণনা করিয়াছেন। ইহা অপেক্ষ ভ্রম আর কিছুই হইতে পারে না। অনেক স্থলে, যেখানে তিনি স্বর্গের কথা বলিয়াছেন, স্ত্রীলোকের বিষয় উল্লেখমাত্র করেন নাই। আর যে যে স্থলে স্ত্রীলোকের উল্লেখ আছে, সেখানে স্ত্রীলোকের পত্নী বা বন্ধু বলিয়া । বর্ণিত হইয়াছে। যদি বা কোন কোন স্থলে পত্নী ছাড়া সুন্দরী কুমারীদিগের উল্লেখ থাকে তাতেই বা এত রাগ কেন ? এ কথা সত্য ফিলজফরের পরলোকে যে সুখসম্ভোগে সন্মতি দেন, তাহার ন্যায় এই সুখের কল্পনাটি ততটা আধ্যাত্মিক নহে, কিন্তু তাই বলিয়া যতই ছেলেমান্তুষি হোক না কেন, হুরিদের বর্ণনায় কোন প্রকার অশ্লীল অপবিত্র ভাব নাই।” বহুবিবাহ ও দাসত্ব সম্বন্ধে অধ্যাপক এইরূপ বলেন—“এমন অনেক সুশিক্ষিত মুসলমান আছেন যাহার বহুবিবাহ ও দাসত্বপ্রথাকে ভাল বলেন না। বহুবিবাহ তো ক্রমশই বিলুপ্ত হইয়া যাইতেছে। মহম্মদ বহুবিবাহের আদেশ দেন নাই, তবে ইহুদিরা এই প্রথাটি রহিত করিবার পক্ষে যেরূপ উপেক্ষ প্রদর্শন করিয়াছিল তিনিও সেইরূপ কেবল উপেক্ষা করিয়াছিলেন শত্র । এই চিরস্মরণীয় কথাগুলি তিনি পশ্চাতে রাখিয়া গিয়াছিল, "আমি মানুষ বৈ আর কিছুই নহি । আমি ধৰ্ম্ম সম্বন্ধে "ধন যাহা তোমাদিগকে আদেশ করি, সে আদেশ তোমরা গ্রহণ * এবং যখন আমি পার্থিব বিষয় সম্বন্ধে তোমাদিগকে আদেশ । করি, সে আদেশ তোমরা গ্রহণ কর। এবং যখন আমি পার্থিব