বলতে রাজি হইনি।” কালেক্টর হঠাৎ আসিতেছেন শুনিয়া হরি । প্রিয় সশঙ্কিত হইয়া উঠিলেন। পথে তাহাকে ম্যানেজারের অভাবনীয় অবস্থার খবর দিবার জন্য ঘোড়সওয়ার রওনা হইয়। গেল । বুদ্ধদেবের মনের ইতিহাস । সেই জনতাবিহীন স্থানে, প্রকৃতির সৌন্দৰ্য্যমালার মধ্যে, নৈরঞ্জনা নদীর ধারে সিদ্ধার্থ ঘোর তপস্যা করিলেন। সে তপস্তার নাম কি ? তাহার তাৎপৰ্য্য কি ? কি উচ্চ কামনায় তিনি এই কঠোর ব্রতে ব্ৰতী হইলেন ? শত শত বৎসর ধরিয়া ভারতবর্ষে যোগ ধ্যানের পরাকাষ্ঠী হইয়া গিয়াছে। সাধনের এমন কোন পথ ছিল না যাহা আবিষ্কৃত হয় নাই । মহা ঋষির আধ্যাত্মিক জীবনের যত কিছু গুঢ় রহস্য ছিল সকলই প্রকাশ করিয়া গিয়াছিলেন । সিদ্ধার্থ এমন কি পারেন নাই ? এমন কি তৃষ্ণ হইয়াছিল যাহা তাহার উপশম করিতে পারেন নাই ? পাঠকগণ, এই দুরুহ প্রশ্নের মীমাংসা করা আবশুক, নচেৎ আমরা শাক্যমুনির জীবনের ঘটনাসকল বুঝিতে পারিব না। সিদ্ধার্থ যখন পিতৃভবনে থাকিয়া দুঃখের পরিচয় পাইলেন, যখন তিনি কপিলবস্তুর পথ দিয়া বিচরণ করিতে করিতে জরা, বাৰ্দ্ধক্য ও মৃত্যুকে সাক্ষাৎ করিলেন, তখন তাহার মনে এই ভাব হইল যে, পৃথিবীতে দুঃখ ভিন্ন আর কিছুই নাই এবং কোন প্রকারে এই দুঃখের হস্ত হইতে কাহারও নিস্তার নাই। তবে কি হইবে ? তাহার পক্ষে কি কোন উপায় নাই ? তিনি ....-“eन्..."Tु হতেছিলেন যাহা তাহারা দিতে ' বুদ্ধদেবের মনের ইতিহাস ৫২১ । দেখিলেন যে সংসারে থাকিলে মুক্তির কোন সম্ভাবনা নাই । - নিস্তার পাইবার চেষ্টা করে, তত আরও তাহাতে জড়াইয়া পড়ে, । '... সেইরূপ কোন লোক সংসারে পড়িয়া যত তাহ হইতে পলায়ন করিতে চেষ্টা করে ততই সে তাহাতে আরও সংশ্লিষ্ট হইয়া যায়। তবে কি দুঃখকে একেবারে পৃথিবী হইতে নিৰ্ম্মল করিয়া দেওয়া যায় না ? এমন কি উপায় নাই, এমন কি কোন স্পর্শমণি নাই । যাহার স্পর্শে দুঃখ সুখ হইয়া যায়, প্রত্যেক পদার্থ স্বর্ণ হইয়া যায় ? সংসারে তাহা কখন হইতে পারে না, এই মীমাংসা তাহার মনে । হইল। কেন না সংসার এক প্রকাণ্ড পরিবর্তনক্ষেত্র – ইহাতে দিনরাত্রি ছায়াবাজী চলিতেছে। ছায়ার দ্যায় পদার্থসকল আসিতেছে, যাইতেছে —কাহাকেও এক মুহূৰ্ত্তের অধিক ধরিয়া রাখিতে পারা যায় না। সেই জন্য তিনি যখন বেড়াইতে বেড়াইতে পথিমধ্যে জনৈক সন্ন্যাসীকে দেখিতে পাইলেন, তখন তাহার মনে । হইল যে, তবে ত সংসার পরিত্যাগ করিয়া লোকে জীবিত থাকিতে । পারে এবং যদি তিনি সন্ন্যাস গ্রহণ করেন তাহা হইলে তিনি ত । নিদেন স্থখহুঃখের অতীত হইতে পারেন । পৃথিবীতে সুখ না হউক বা দুঃখ না হউক, কেহ যদি সুখদুঃখের অতীত হয়, তাহাই । যে তাহার পক্ষে পরম সৌভাগ্য বলিতে হইবে। এই মনে করিয়া তিনি সংসার ছাড়িলেন। কিন্তু সংসার ছাড়িয়াও তিনি যাহা - চাহিতেছিলেন তাহ পাইলেন না । তিনি যত পলায়মান হইয়া দূরে যাইতে লাগিলেন তত তাহার শরীর সঙ্গে সঙ্গে চলিল বটে, কিন্তু মনটা সংসারে পড়িয়া রহিল। পাঠক মনে রাখিবেন যে, । কপিলবুস্তু পরিত্যাগ করিবার অব্যবহিত পরেই তাহাকে মার অথবা পাপচিন্তা আসিয়া আক্রমণ করে। ইহাতে তাহার আর
পাতা:সাধনা (তৃতীয় বর্ষ, প্রথম ভাগ).djvu/২৩৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।