ーQミ8 - -- . সাধনা। । l ছিলেন বলিয়া যে সে কথা সত্য হইবে ইহার কোন অর্থ নাই। তিনি কায়মনোবাক্যে নিজেই সত্যসাধনে স্থিরপ্রতিজ্ঞ হইয়াছিলেন। অতএব ইহাতে অন্ত কাহারও কথা চালাইবার কোন অধিকার । ছিল না। তিনি শাস্ত্রসন্মত পথ সকল অবলম্বন করিলেন। যখন তাহাতে কোন ফল হইল না দেখিলেন, তখন তিনি নিজের পথ অবলম্বন করিলেন। জাতীয় আচার, শাস্ত্রীয় নিয়ম এ সকলকে অবজ্ঞা করিয়া যাহাতে মুক্তি হয় ইহারই চেষ্টা করিতে লাগিলেন। ভয়ানক কঠোর সাধন করিয়া দেখিলেন যে, তিনি একপদও অগ্রসর হইতে পারেন নাই। শরীরের প্রতি যথেষ্ট অত্যাচার ; করিয়া বুঝিলেন যে, মন যেখানে ছিল সেইখানেই রহিল। ইহার কারণ কি ? ব্রহ্মচারীদিগকে তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন—“আপনার কেন এত দুস্তর তপশ্চরণ করিতেছেন ?” তাহারা উত্তর দিলেন – “পরমার্থ পাইব বলিয়৷ ” তিনি বলিলেন –“পরমার্থ শব্দের অর্থ কি ?” তাহারা উত্তর দিলেন “পরকালে গিয়া ব্ৰহ্মপদ পাইব, বা ইন্দ্রত্ন পাইব, বা অন্ত কোন দেবপদ পাইব । এজন্মে শরীরকে নির্যাতন করিলে পরজন্মে নিত্যস্থখ উপার্জন করিব।” সিদ্ধার্থ ভাবিলেন যে, পরজন্মের স্থখ— ইহার অর্থ অত্যন্ত অধিক পরিমাণে সম্ভোগ করা। পৃথিবীতে যে সুখ অল্প পরিমাণে হয়, যে সুখ ক্ষণস্থায়ী হয়, তাহ স্বর্গে অধিক পরিমাণে এবং অধিক কাল থাকে। কিন্তু মুখ কথাটি আপেক্ষিক ইহা তিনি সিদ্ধান্ত করিয়াছিলেন। সে সুখ আমরা পৃথিবীতে সম্ভোগ করি বা স্বর্গে সম্ভোগ করি, উভয় স্থানে ইহা আপেক্ষিক ভিন্ন আর কিছুই নহে। কেননা দেব পদ প্রাপ্ত হইলেই একটি নূতন শরীর সঙ্গে সঙ্গে যাইবে এবং শরীর । থাকিলেই পরিবর্তনও সঙ্গে সঙ্গে । যাইবে | C으 সমুদয় জগত भावः ময়, ছায়াময়, সদা পরিবর্তনশীল। ইহার কোন অংশই স্থির নিত্য আছে তাহতে পূর্ণ কামনা ও সম্ভোে বুদ্ধদেবের মনের ইতিহাস। ২৫ নহে। ইহার কোন পদার্থই একভাবে থাকে না। যাহাকে মুখ । বলি তাহা আমার নিকট সুখ হইতে পারে, তোমার নিকট তাহা । দুঃখ। কিম্বা তাহ এক মুহূৰ্ত্তে সুখ, অপর মুহূৰ্ত্তে দুঃখ। যে পদার্থকে আমি সুন্দর বলিয়া সুখী হই, সেটা হয়ত তোমার নিকট কদৰ্য্য এবং দুঃখকর। সিদ্ধার্থ যে সকল সুন্দরী রমণী লইয়া অনেক দিন সুখে কাল যাপন করিতেছিলেন, তাহাদিগকে নিদ্রাবস্থায় তিনি অতি কুৎসিত ও কদাকারা দেখিয়াছিলেন, সুতরাং সুখ শব্দের ৷ অর্থ কি ? আকাশের মেঘ কখন একটি মানুষের আকার কখন বা উষ্ট্রের আকার কখন কখন বা বৃক্ষের আকার, কত কত প্রকার আকার অৰ্দ্ধ ঘণ্টার মধ্যে ধারণ করে। কোনটিকে এক মিনিটের অধিক চক্ষের সম্মুখে রাখিতে পারি না। এই একরূপ হইল, অব্যবহিত পরেই আর একরূপ হইল। জীবনের মুখ সেই প্রকার। যতদিন ইহা শরীরের সঙ্গে যুক্ত আছে, ততদিন শরীরের ন্তায় । ইহারও পরিবর্তন । ইহাকে সুখ বলা যায়, দুঃখও বলা যায়। । অর্থাৎ ইহার প্রকৃত অর্থ কিছুই নাই। অতএব আমরা যদি স্বর্গে শরীর লইয়া যাই, তাহ হইলে শরীর সম্বন্ধীয় কামনা সকলও আমাদের সঙ্গে সঙ্গে যাইবে এবং কামনা হইতে যে সকল সুখ দুঃখ সস্তৃত হয় তাহাও যাইবে । এমন হইতে পারে যে, এখানে যে সুখ । পাই তাহা ক্ষণিক, তাহ স্বর্গেতে অনেক কাল স্থায়ী হইবে। কিন্তু তাহাতে সিদ্ধার্থের কথার মীমাংসা হইল কোথা ? অনিত্যের ভিতর থাকিলেই দুঃখ আসিবে, সুখে মন নিযুক্ত করিলেই তাহার সঙ্গে সঙ্গে দুঃখ আসে। তিনি এমন অবস্থা চাহিতেছিলেন যাহাতে মন স্থখ দুঃখ উভয়ের অতীত হয়, অর্থাৎ চিরশান্তি অনুভব করে। আবার তিনি ইহাও দেখিলেন যে, শাস্ত্রে যে স্বৰ্গ বর্ণিত । গর সমস্ত বিষয় আছে । স্বর্গে - ঘ । • :
পাতা:সাধনা (তৃতীয় বর্ষ, প্রথম ভাগ).djvu/২৩৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।