ass - - - সাধন। দ্বিতীয়তঃ, যেখানে সাহিত্যের মধ্যে কোন আদর্শ নাই, যেখানে পাঠক অসামান্ত ঔৎকর্ষের প্রত্যাশাই করে না, যেখানে লেখক অবহেলাভরে লেখে এবং পাঠক অনুগ্রহের সহিত পাঠ করে, যেখানে অল্প ভাল লিখিলেই বাহবা পাওয়া যায় এবং মন্দ লিখিলেও কেহ নিন্দ করা বাহুল্য বিবেচনা করে, সেখানে কেবল আপনার অন্তরস্থিত উন্নত আদর্শকে সৰ্ব্বদা সম্মুখে বর্তমান রাখিয়া, সামান্ত পরিশ্রমে সুলভ খ্যাতি লাভের প্রলোভন সম্বরণ করিয়া, অশ্রান্তযত্নে অপ্রতিহত উদ্যমে দুর্গম পরিপূর্ণতার পথে অগ্রসর হওয়া অসাধারণ মাহাক্স্যের কৰ্ম্ম । চতুৰ্দ্দিকব্যাপী উৎসাহহীন জীবনহীন জড়ত্বের মত এমন গুরুভার আর কিছুই নাই ; তাহার নিয়ত প্রবল ভারাকর্ষণ শক্তি অতিক্রম করিয়া উঠা যে কত নিরলস চেষ্টা ও বলের কৰ্ম্ম তাহা এখনকার সাহিত্য ব্যবসায়ীরাও কতকটা বুঝিতে পারেন— তখন যে আরও কত কঠিন ছিল তাহ কষ্টে অনুমান করিতে হয়। সৰ্ব্বত্রই যখন শৈথিল্য এবং সে শৈথিল্য যখন নিন্দিত হয় না তখন আপনাকে নিয়মব্রতে বদ্ধ করা মহাসত্ব লোকের দ্বারাই সম্ভব। বঙ্কিম আপনার অন্তরের সেই আদশ অবলম্বল করিয়া প্রতিভাবলে যে কাৰ্য্য করিলেন তাহ অত্যাশ্চৰ্য্য। বঙ্গদর্শনের পূর্ববৰ্ত্তা এবং তাহার পরবর্তী বঙ্গসাহিত্যের মধ্যে যে উচ্চনীচত। তাহ অপরিমিত । দার্জিলিং হইতে র্যাহারা কাঞ্চনজঙ্ঘার শিখরমালা দেখিয়াছেন তাহারা জানেন সেই অভ্ৰভেদী শৈলসম্রাটের উদয়রবিরশ্মিসমুজ্জ্বল তুষারমুকুটত মস্তক চতুর্দিকের নিস্তব্ধ গিরিপারিষদবর্গের কত উদ্ধে সমুথিত হইয়াছে ! বঙ্কিমচন্দ্রের পরবর্তী বঙ্গসাহিত্য সেইরূপ আকস্মিক অত্যুন্নতি লাভ করিয়াছে ; একবার সেইটি নিরীক্ষণ এবং পরিমাণ করিয়া দেখিলেই বঙ্কিমের প্রতিভার প্রভূত বল সহজে অনুমান করা যাইবে । - - - --++~^:* গ্রহণ করাতেই বঙ্গসাহিত্য এত সত্বর এমন দ্রুত পরিণতি লাভ করিতে বঙ্কিম নিজে বঙ্গভাষাকে যে শ্রদ্ধা অর্পণ করিয়াছেন অন্তেও তাহাকে সেইরূপ শ্রদ্ধা করিবে ইহাই তিনি প্রত্যাশা করিতেন । পূৰ্ব্ব অভ্যাসবশতঃ সাহিত্যের সহিত যদি কেহ ছেলেখেলা করিতে আসিত তবে বঙ্কিম তাহার প্রতি এমন দণ্ডবিধান করিতেন যে । দ্বিতীয়বার সেরূপ স্পৰ্দ্ধা দেখাইতে সে আর সাহস করিত না । তখন সময় আরও কঠিন ছিল। বঙ্কিম নিজে দেশব্যাপী একটি ভাবের আন্দোলন উপস্থিত করিয়াছিলেন। সেই আন্দোলনের প্রভাবে কত চিত্ত চঞ্চল হইয়া উঠিয়াছিল, এবং আপন ক্ষমতার সীম উপলব্ধি করিতে না পারিয়া কত লোক যে এক লম্ফে লেখক হইবার চেষ্টা করিয়াছিল তাহার সংখ্যা নাই। লেখার প্রয়াস জাগিয়া উঠিয়াছে অথচ লেখার উচ্চ আদর্শ তখনও দাড়াইয়া যায় নাই। সেই সময় সব্যসাচী বঙ্কিম এক হস্ত গঠনকার্য্যে এক হস্ত নিবারণ কার্য্যে নিযুক্ত রাখিয়াছিলেন। একদিকে অগ্নি জালাইয়া রাখিতেছিলেন আর একদিকে ধূম এবং ভস্মরাশি দূর করিবার ভার । নিজেই লইয়াছিলেন । 5F びTST甘て安T甘下ェT t4 - * v i সক্ষম হইয়াছিল। সাহিত্যের পক্ষে যাহা কিছু অযোগ্য, যাহা কিছু অনাবশুক, যাহাতে কিছুমাত্র অবহেলা বা অক্ষমতা প্রকাশ পাইত তাহাকে তিনি কদাচ মার্জনা করিতেন না । এই সমস্ত স্বল্পায়ু ক্ষুদ্র প্রাণীদের প্রতি তিনি এমন কঠোর আঘাত এমন সুতীব্র বিদ্রুপ প্রয়োগ করিতেন যে, অনেক সময় তাহা অনাবশুক নিষ্ঠুরতা বলিয়া মনে হইত ; --অনেক সময় মনে হইত এই সকল ক্ষীণজীবী দের পুতি বঙ্কিমের প্রবল বাহুর আঘাত যথাযোগ্য নহে। বিশে যত তখনও বাঙ্গালা লেখার শৈশব অভ্যাসগুলি দূর হয় নাই, । বঙ্কিমচন্দ্ৰ । -
পাতা:সাধনা (তৃতীয় বর্ষ, প্রথম ভাগ).djvu/২৪৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।