কেই বাকপ্রাচুর্য্যে এবং কল্পনাকুহকে সমাচ্ছন্ন করিয়া তুলিতেন, t এবং নিজের বিশ্বাস ও ভাষাকে যথাসাধ্য টানিয়া বুনিয়া আশে পাশে দীর্ঘ করিয়া অবিক পরিমাণ লোককে আপন মতের জালে আকর্ষণ করিতে চেষ্টা করিতেন । বঙ্কিম যেখানে ইষ্টকের উপর ইষ্টক স্থাপন করিয়া সমুন্নত সুদৃঢ় প্রাসাদ নিৰ্ম্মাণ করিয়াছেন, এখনকার কোন হৃদয়াধিক্যবিশিষ্ট লেখক সে স্থলে প্রচুর বাম্পোচ্ছ,াসযোগে । বেলুন নিৰ্ম্মাণ করিয়া একেবারে মেঘরাজ্যে ছাড়িয়া দিতেন—কিন্তু সে বেলুন যতই উচ্চে উঠুক না কেন তাহ ভিত্তিহীন, তাহ কিছুকালের জন্য সাধারণের কৌতুহলজনক কিন্তু বাসযোগ্য নহে, এবং সেই বেলুনযোগে যিনি আপন যশকে উদ্ধে উডঙীন করিয়া দিতেন একদিন আকস্মিক পতনে অপমৃত্যুর জন্য সে যশকে প্রস্তুত হইয়। থাকিতে হইত । বঙ্কিম গীতার উপদেশ অনুসারে কেবলমাত্র আপনার কৰ্ম্ম করিয়া গিয়াছেন, ফললাভের প্রতি দৃকপাত করেন নাই। তিনি নিজে কৃষ্ণকে পরিপূর্ণ ভক্তি করিতেন অথচ আধুনিক কৃষ্ণভক্তদিগকে প্রসন্ন করিবার কোন চেষ্টা করেন নাই, তিনি কৃষ্ণের দেবত্বে সম্পূর্ণ বিশ্বাস করিতেন অথচ বহুযত্নে বহুসাবধানে কৃষ্ণচরিত্র হইতে সমস্ত অলৌকিক অংশ দূর করিয়া দিয়াছেন ; আমাদের দেশের । লোকের যে অন্ধভক্তি এবং নিৰ্ব্বিচার অতিবিশ্বাসের দিকে প্রবণতা আছে বঙ্কিম তাহার সমস্ত রচনায় কোথাও তাহার পোষণ বা সমর্থন করেন নাই, বরং প্রতিপদে তাহাকে আঘাত করিয়া গিয়াছেন। ইহা হইতে স্পষ্ট বুঝা যায় আমাদের শাস্ত্র হইতে ইতিহাস উদ্ধারের দুরূহ ভার কেবল বঙ্কিম লইতে পারিতেন। এক দিকে হিন্দুশাস্ত্রের প্রকৃত মৰ্ম্মগ্রহণে যুরোপীয়গণের অক্ষমতা, অন্য দিকে শাস্ত্রগত প্রমাণের নিরপেক্ষ বিচার সম্বন্ধে হিন্দুদিগের সঙ্কোচ ; _ _ একদিকে রীতিমত পরিচয়ের অভাব, অন্তদিকে অতিপরিচয়জনিত অভ্যাস এবং সংস্কারের অন্ধত ; যথার্থ ইতিহাসটিকে এই উভয়সঙ্কটের মাঝখান হইতে উদ্ধার করিতে হইবে। দেশানুরাগের সাহায্যে শাস্ত্রের অন্তরে প্রবেশ করিতে হইবে এবং সত্যানুরাগের সাহায্যে তাহার । অমূলক অংশ পরিত্যাগ করিতে হইবে। যে বল্লার ইঙ্গিতে লেখনীকে বেগ দিতে হইবে, সেই বল্লার আকর্ষণে তাহাকে সৰ্ব্বদা সংযত করিতে হইবে। এই সকল ক্ষমতাসামঞ্জস্ত বঙ্কিমের ছিল –সেই জন্য মৃত্যুর অনতিপূৰ্ব্বে তিনি যখন প্রাচীন বেদ পুরাণ সংগ্ৰহ করিয়া প্রস্তুত হইয়া বসিয়াছিলেন তখন বঙ্গসাহিত্যের বড় আশার কারণ ছিল, কিন্তু মৃত্যু সে আশা সফল হইতে দিল না, এবং আমাদের ভাগ্যে যাহা অসম্পন্ন রহিয়া গেল তাহা যে কবে সমাধা হইবে কেহই বলিতে পারে না। যুক্তিবিচারকে প্রাধান্ত না দিয়া বঙ্কিম যদি নিজেই গুরু সাজিয়া দাড়াইতেন, অনুসন্ধান দ্বারা সত্যের দিকে পথ নির্দেশ না করিয়া তিনি যদি নিজে কেই ধ্রুবতারা বলিয়া প্রচার করিতেন দেশের লোকের মনের গতি বুঝিয়া তিনি যদি অন্ধবিশ্বাস এবং অলৌকিকবাদকে আপন পক্ষভুক্ত করিতে চেষ্টা করিতেন তবে এই দেবানুগৃহীত বঙ্গদেশে অনায়াসেই তিনি একজন নুতন অবতার হইয়া দাড়াইতে পারি তেন। তবে তাহার অসংখ্য উন্মত্ত শিষ্যগণ এমন নিবিড় ব্যুহরচনা করিয়া আজ তাহাকে বেষ্টন করিয়া থাকিত যে, আমরা সাহিত্যভক্তগণ আর সহজে আমাদের গুরুর সমীপবৰ্ত্তী হইতে পারিতাম না। বঙ্কিম এই যে সৰ্ব্বপ্রকার আতিশয্য এবং অসঙ্গতি হইতে আপনাকে রক্ষা করিয়া গিয়াছেন ইহা তাহার প্রতিভার প্রকৃতিগত। যে কেহ তাহার রচনা পড়িয়াছেন সকলেই জানেন বঙ্কিম হাস্যরসে স্বরসিক ছিলেন। যে পরিষ্কার যুক্তির আলোকের দ্বারা সমস্ত আতি ł | | ; i i | ‘... I ! ...i
i } ! 3 : * . ; * j : ·洛 # 塔· ; :