পাতা:সারার্ণব - দ্বিতীয় খণ্ড.pdf/৫৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8b" সারার্ণব । অর্থাৎ পঞ্চ মহাভূত, পঞ্চতন্মাত্র, জ্ঞানকর্শ্বেক্রিয় দশ, অন্তঃকরণ চতুষ্টয়, ত্রিগুণ। প্রকৃতি ও অভিমানী-প্রাণ ( কাল , এই ষড়বিংশতি তত্ত্বাত্মক মহাবিভূ বিরাট অখিলদেহভূৎ পুরুষরূপে অবস্থিতি করিতেছেন । " মূল প্রকৃতি-মায়া সকল বিশ্বের রূপ, তিনি ব্ৰহ্মাশ্রয়া ব্রহ্মবিষয়া তৎকারণ ব্রহ্ম দুৰ্ব্বিজ্ঞেয়, মায়া রসাস্বাদন সংশ্লিষ্টতায় ঈশ্বরত্ব স্বীকার করিয়া অহং অভিমানের সহিত ‘সৎ কাৰ্য্যতন্ময় ও ‘প্রমের’ হইয়াছেন । যেমন হুগ্ধে স্থত, কাষ্ঠে অগ্নি, তিলে তৈল, আকাশে শব্দ, এই প্রকারে প্রকৃতি পুরুষের অনাদি নিত্য সম্বন্ধ । ‘নিত্যমুক্তমবাধকঃ’ এই শ্রতি তাৎপর্য্যে বদ্ধ ও বাধা নিষেধ উপলক্ষিত হইয়াছে, বদ্ধ পুরুষই মুক্ত হয়। নিত্যবন্ধন আশঙ্কা’ না থাকিলে নিত্যমুক্ত’ শব্দের যোজনা অসম্ভব। ব্ৰহ্ম স্বরূপতঃ নিস্কয়, মায়ীও জড়া মৃৎপিণ্ডের ন্যায় অক্রিয়, তবে কৰ্ত্ত কে ?—এই প্রত্যক্ষ জগতের কি কর্তা নাই ? ইহাতে অনীশ্বরবাদ আইসে, অতএব হে হংসি ! সিদ্ধান্ত এই যে, নিস্কৃয় ব্রহ্ম করণরূপ প্রকৃতিযুক্ত হইয়া মেঘে বিদ্যুতের ন্তায় ক্রিয়ার উৎপাদক হইয়াছেন । কার্য্য কারণের অভেদ দ্যায়ে ‘সৎ’ কাৰ্য্য, অসৎ কারণকে আশ্রয় করিয়াছেন নিশ্চয় । অধিকারী পদে অস্মি’ শব্দের অন্তবৃত্তি বিকার শোধন হেতু সাক্ষাৎকার, অপরোক্ষ জ্ঞানসাধ্য আত্মলাভকেই লক্ষ্য করিয়াছেন । পুরুষসংযোগে সচৈতন্থা প্রকৃতি দ্বারা যে ক্রিয়া সম্ভব হয়, তাহাকেই তদ্বিকার বলা যায়। স্থৰ্য্য ও মণিসংযোগে যে অগ্নির ভাব, তাহাই বিকার। অয়স্কান্ত লৌহ যেমন অচল হইয়াও (শক্তিগুণে ) সচলের সম্বন্ধ রাখে, তদ্বৎ মায়া ব্ৰহ্ম উভয়ে অক্রিয় হইয়াও সংযোগে সক্রিয় (বিকারী ) হয়েন। ব্রহ্মসং অতএব তদ্বিকার সেই বিশ্বকাৰ্য্যও সৎ’, নচেৎ ধৰ্ম্মাধৰ্ম্মের শুভাশুভ ফল নিস্ফল হয়। এক দীপ হইতে বহু দীপের দ্যায় এক জ্ঞানে বহুজ্ঞানের ব্যুৎপত্তি হইয়া নানা চেষ্টাকারী, বন্ধমোক্ষ প্ৰবোধক, স্বৰ্গ নরক, পাণ্ডিত্য মুখত্ব, ভিন্ন ভিন্ন জাতি স্বভাবে পৃথক পৃথক পরমাত্মা অনুভূত হয়েন, একারণ পরমার্থ ও ব্যবহারিক জ্ঞানদ্বয় স্বরূপ পক্ষদ্বর যুক্ত ( গুরু) হংস পদ’, একীকৃত ক্ষীরনীরের শোধনার্থ সোহং হংস চিৎ ইত্যাদি সিদ্ধান্ত ‘অম্মি’ শব্দ দ্বারা সপ্রমাণ করেন ইহাও সত্য । এইরূপে যজুৰ্ব্বেদের মহাবাক্য দ্বারা ‘আমিই সেই ব্ৰহ্ম’ ইত্যাদি অধ্যাত্মজ্ঞান প্রত্যক্ষ অধিযজ্ঞেনিশ্চয় করিয়া পরপক্ষের বোধার্থ সামবেদের মহাবাক্য “তত্ত্বমদি’ পদের ব্যাখ্যা করিতেছেন, ইতি দ্বিতীয়োহধ্যায়ঃ।