যতেক ভকতগণ, হৈয়া সকরুণ মন,
পদচিহ্ন অনুসারে ধায়॥’
আজও প্রায়ই সংকীর্ত্তন আসরে উদ্ধৃত হয়। জগদানন্দ নীলাচল থেকে শচীকে দেখতে আসছেন, সে ছবিটিও বড় করুণ:
‘ভাবয়ে পণ্ডিত রায়।
পাই কি না পাই শচীরে দেখিতে এই অনুমানে চায়॥
লতা তরু যত দেখে শত শত, অকালে খসিছে পাতা।
রবির কিরণ হয় স্ফুরণ মেঘগণ দেখে রাতা॥
ডালে বসি’ পাখী মুদি দুটি আঁখি ফুলজল তেয়াগিয়া।
কান্দয়ে ফুকারি ডুকরি ডুকরি গোরাচান্দ নাম লইয়া॥
ধেনু যুথে যুথে দাঁড়াইয়া পথে কারো মুখে নাহি রা’।
মাধবী দাসীর পণ্ডিত ঠাকুর পড়িলা আছাড়ি গা।’
মৈমনসিংহের পাটবাড়ী গ্রামের বংশীদাস বন্দ্যোপাধ্যায় (উপাধি চক্রবর্তী) মনসামঙ্গল রচনা ক’রে বিখ্যাত হয়েছিলেন। ষোড়শ শতাব্দীর শেষদিকে বংশীদাসের কন্যা চন্দ্রাবতীর লেখা ‘কথা রামায়ণ’ এ পর্যন্ত যত পৌরাণিক ছড়া বা গাথা পাওয়া গেছে, তার মধ্যে সব চেয়ে প্রাচীন। দরিদ্র পিতার ঘরে চন্দ্রাবতীর জন্ম—তাঁর নিজের ভাষায়:
“ঘরে নাই ধান চাল, চালে নাই ছানি।
আকর ভেদিয়া পড়ে উচ্ছিলার পাণি॥
ভাসান গাহিয়া পিতা বেড়ান নগরে।
চাল কড়ি যাহা পান আনি’ দেন ঘরে॥
বাড়াতে দারিদ্র্যের জ্বালা কষ্টের কাহিনী।
তার ঘরে জন্ম নৈল চন্দ্রা অভাগিনী॥