পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/১৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি
১৭৭

করেছিলেন এবং শত শত পণ্ডিত এবং কবিকে বৃত্তি দিয়ে আশ্রয় দিয়ে সাহিত্যচর্চায় সাহায্য করেছিলেন। হিন্দুরাজত্বের অবসানে গুজরাতে স্ত্রীশিক্ষা কিছুদিনের জন্য ব্যাহত হয়েছিল, তবে জৈন সন্ন্যাসিনীরা শাস্ত্রচর্চার ধারা সেদিনও মঠে মঠে রক্ষা ক’রে স্ত্রীশিক্ষা অব্যাহত রেখেছিলেন। বাংলার শ্রীচৈতন্য এবং গৌড়ীয় বৈষ্ণবসম্প্রদায়ের প্রভাব যোড়শ শতাব্দীতে যখন সমস্ত ভারতবর্ষকে অনুপ্রাণিত করে, তখন পশ্চিম ভারতের এক বিদুষী ধর্মপ্রাণা নারী বৃন্দাবন থেকে তাঁর অন্তরের হোমশিখা দ্বারকার সমুদ্রতীর পর্যন্ত নিয়ে গেছলেন, তাঁর নাম মীরাবাই। মীরাবাইয়ের কথা আমরা পূর্বে সামান্য কিছু বলেছি, তাঁর ভাষা ছিল পশ্চিম রাজস্থানী, তখনও সেই ভাষাই গুজরাতের দেশভাষা; সুতরাং মীরাবাইকে রাজপুতানা এবং গুজরাত নিজের লোক ব’লে সমভাবেই দাবী করে। মীরাবাইয়ের সম্বন্ধে এইটুকু ব’ললেই যথেষ্ট হবে যে, তাঁর চেয়ে বড় কবি পশ্চিম ভারতে আজ পর্যন্ত জন্মাননি। ‘বোড়া’ নামক গুজরাতী মুসলমান-সম্প্রদায়ের মধ্যে পরবর্তী যুগে ‘রতনবাই’ নামক সুকবির আবির্ভাব হয়েছিল, তাঁর ভজনগুলিতে মীরারই প্রভাব দেখা যায়।

 ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষদিকে পাশ্চাত্য ভাবধারার সংস্পর্শে এসে গুজরাতী সাহিত্য নূতন ভাবে গড়ে উঠতে আরম্ভ করেছে। গত শতাব্দীতে শিক্ষিতা গুজরাতী নারীদের মধ্যে শ্রীমতী বিদ্যাগৌরী নীলকণ্ঠ প্রথম গ্র্যাজুয়েট হন। তিনি নিজের বহু প্রবন্ধ রচনা ছাড়া তাঁর স্বামী রমণ ভাই নীলকণ্ঠের ‘হাস্যমন্দির’ রচনায় সাহায্য করেছেন। বর্তমান শতাব্দীর প্রারম্ভে শ্রীমতী সুমতি ত্রিবেদী (মৃত্যু ১৯১১) ও বিজয়লক্ষ্মী ত্রিবেদীর (মৃত্যু ১৯১৩)

O.P.92—23