পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/২০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮৪
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী

নিজের ব্যর্থ জীবনের অব্যক্ত ক্রন্দনকে তিনি সাহিত্যে রূপ দিয়েছেন, আজও তার করুণ সুর শ্রোতার মর্ম স্পর্শ করে। তবে কুপ্পামাম্বার রচনায় একঘেয়ে করুণ রসের প্রবাহ এবং নারীসুলভ বিলাপ আজকালকার সকল শ্রোতার ভালো না’ও লাগতে পারে। যাই হোক, কুপ্পামাম্বা তেলুগু সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি ব’লে অতীতের সম্মান পেয়ে গেছেন, এ কথা অস্বীকার করা যায় না।

 মুসলমান আক্রমণের পর দক্ষিণ-ভারতে অবনতির যুগ আরম্ভ হয়। তেলুগু সাহিত্যে এর পর দুই শতাব্দীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নারী কবির সাক্ষাৎ আমরা পাই না। খৃষ্টীয় ষোড়শ শতাব্দীর পূর্বে আরও কয়েকজন বিদুষীর রচনা পাওয়া যায়, তাঁরা সকলেই সংস্কৃতে কবিতা লিখেছেন। এ যুগের মেয়েরা লেখাপড়া শিখলেই সংস্কৃত ভাষায় কবিতা লিখতেন, তাঁদের নিয়ন্ত্রিত ক’রবার জন্য কোনো সঙ্ঘও ছিল না, দেশভাষার সমাদরও কমে গেছল। রাজসভায় তেলুগু ভাষা সমাদর লাভ করে আবার বিজয়নগরের স্বাধীন হিন্দুরাজত্বে। ঘোড়শ শতাব্দীর প্রারম্ভে একদিকে বাংলাদেশ থেকে শ্রীচৈতন্যের ভক্তিরসের বন্যা দক্ষিণ ভারতকে চঞ্চল করে তোলে, অপরদিকে বিজয়নগরের রাজাধিরাজ কৃষ্ণদেব রায়ের সহায়তা এবং পৃষ্ঠপোষকতায় দক্ষিণী কবিরা নূতন প্রেরণা লাভ করেন। এই যুগের দু’জন ক্ষণজন্মা নারী তেলুগু সাহিত্যকে তাঁদের রচনাসম্ভার দ্বারা সমৃদ্ধ করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে একজন গ্রামবাসিনী দরিদ্র কুম্ভকার-কন্যা, আর একজন রাজাধিরাজ-দুহিতা। একজন জীবিতকালে যেমন সুপ্রসিদ্ধা ছিলেন, আজও ঠিক তেমনি