পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী: স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি

তৈত্তিরীয় আরণ্যকে দেখা যায় মন্ত্রপাঠে হোমে আহুতিতে স্ত্রী সমানভাবে যোগ দিতে পারতেন। অরণ্যবাসের সময়ে সীতাদেবী নিয়মিত সন্ধ্যাবন্দনাদির জন্য নদীতীরে যেতেন। বনগমন কালে রামচন্দ্র তাকে প্রথমতঃ সঙ্গে নিতে চাননি, সেই সময়ে সীতাদেবী তাঁকে যে সব জ্ঞানগর্ভ কথা বলেছিলেন তাতে তাঁর পাণ্ডিত্যের পরিচয় পাওয়া যায়। অত্রি-পত্নী অনসূয়া শুধু সর্বশাস্ত্রজ্ঞ সুপণ্ডিতা ছিলেন না, তাঁর তপঃপ্রভাবে অনাবৃষ্টি নিবারণ, ঋষিদের তপোবিঘ্ন নিরসন এবং দেবকার্য সুসাধন হত। তার স্বামী তাকে ‘মহাভাগা’, সর্বভূতের নমস্কারার্হা, ধর্মচারিণী তপস্বিনী’ বলে বনবাসকালে সীতাকে তার কাছে উপদেশ নিতে অনুরোধ করেছেন। মতঙ্গ আশ্রমের পরিচারিকা হীনবংশোদ্ভবা শবরীও শংসিতব্রতা তপঃসিদ্ধা নিত্য ধর্মনিরতা তপস্বিনী এবং সাক্ষাৎ ‘দেবতার মতো’ সকল লোকের নমস্কৃতা ছিলেন। বালির মৃত্যুর পর শোকবিহ্বলা তারা রামচন্দ্রকে অনুরোধ করছেন, তিনি যেন তাঁকে হত্যা করেন। সেই উপলক্ষ্যে বেদ ও শাস্ত্রের দোহাই দিয়ে স্ত্রী যে স্বামী থেকে অভিন্নাত্মা সেই কথা প্রমাণ ক'রে, তাঁকে মারলে যে স্ত্রীবধের পাপ হবে না, তাও বুঝিয়ে দিচ্ছেন। সুগ্রীব রাজভোগে শ্রীরামের কার্য ভুলে বিলম্ব করছেন দেখে লক্ষ্মণ যখন তাঁকে শিক্ষা দিতে যান, তখন তাঁরা তাঁকে কামের দুর্জয় প্রভাব সম্বন্ধে দৃষ্টান্তসহ বক্তৃতা দিয়ে শান্ত করেন। এই অনার্য নারী ছাড়া মন্দোদরী, কৈকসী প্রভৃতি অনার্যা বিদুষীর সাক্ষাৎ আমরা রামায়ণে পাই। রঘুকুলের কুল পুরোহিত মহষি বশিষ্ঠের পত্নী অরুন্ধতী বশিষ্ঠের সমানশীলা ও সমান ব্রতচারিণী ছিলেন। (অনু ১৩০) তাঁর কাছে পিতৃগণ

O.P. 92-2