“গিরিবর! আর আমি পারিনা হে, প্রবোধিতে উমারে!
উমা কেঁদে করে অভিমান, নাহি করে স্তনপান,
নাহি খায় ক্ষীর ননী সরে।
অতি অবশেষ নিশি, গগনে উদয় শশী,
বলে উমা ধরে দে’ উহারে।”
সপ্তমীতে গিরিপুরে পতিগৃহবাসিনী কন্যা আসছেন। কন্যাবিরহকাতরা জননীর কাছে ছুটে গিয়ে পিতা নিজের মুখে সেই প্রার্থিত সন্দেশ বিতরণ করছেন;—
“আজ শুভ নিশি পোহাল তোমারে,
এই যে নন্দিনী এল, বরণ করিয়া আন ঘরে।
মুখশশী দেখ আসি, দূরে যাবে দুঃখ রাশি,
ও চাঁদ মুখের হাসি, সুধারাশি ঝরে।”—রামপ্রসাদ।
কমলাকান্তের গিরিপুরেও ঠিক এই একই ব্যাপার! বাপ মেয়ে আন্তে গেছলেন, এসে পৌঁছেছেন, কর্মব্যস্ত মায়ের কাছে ঐ সংবাদ পরিজনেরা দিতে ছুটেছে;—
“কি কর, কি কর গৃহে দেখ না আসিয়ে গো,
গিরিবর এল গৃহে উমারে লইয়ে গো।”
আবার নিজ কৃতকার্যতায় সানন্দচিত্ত গিরিবরও গৃহিণীকে হাসিমুখে বলছেন;—
“এই নাও গিরিরাণি তোমার উমারে,
ধর ধর হরের জীবনধন।
কতনা মিনতি করি, তুষিয়া ত্রিশূলধারী,
প্রাণ উমা আনিলাম নিজ পুরে।”