পারিজাতহরণ কাণ্ডের প্রসিদ্ধা নায়িকা) রুক্মিণী এবং সর্বোপরি শ্রীকৃষ্ণভগিনী বৈষ্ণবী সুভদ্রা। সুভদ্রা-চরিত্র কবি মহামানব ও যুগাবতারের ভগিনীর ঠিক যেমন হওয়া উচিত, সেই ভাবেই সৃষ্টি ক’রে, নিজের সৃষ্টিতত্ত্ব-কুশলতার পরিচয় দিয়েছেন। তাই পুত্রবিয়োগে সুভদ্রার মুখে শুনি;
“দয়াময়! নাহি শোক, সাধিল তোমার কর্ম্ম
পুত্র যার, শোক তার নাহি ধরাতলে।
ক্ষত্রিয়ের গুরু দ্রোণ, ভুজবলে তাঁর পণ,
ষোল বৎসরের শিশু লঙ্ঘিল যাহার,
সেই বীর-জননীর শোক কি আবার!”
বালবিধবা পূতচরিত্রা হাস্যরহস্যময়ী অথচ মাতৃস্নেহে অভিষিক্তা সুলোচনা এবং অর্জুনের প্রতি ব্যর্থপ্রেমের পরিশেষে নিষ্কাম প্রেমে, বিশ্বপ্রেমে আত্মনিমজ্জিতা শৈল তাঁহার নিজস্ব সৃষ্টা এই দুইটি নারী চরিত্র প্রকৃতই সুন্দর! তাদের পরিচয় দু’টি কথায় দেওয়া সম্ভব না হ’লেও ঈষৎ একটু আভাস দু’টি লাইনে দেওয়া যায়;—
“হাসে নাই নিজ সুখে, কাঁদে নাই নিজ দুঃখে,
চিরদিন প্রেমময়ী সলিলের মত,
আপন তরল প্রাণ, পরে করিয়াছে দান,
সুলোচনা চিরদিন পরপ্রাণগত।”
কুরুক্ষেত্রের শ্মশানভূমে সুভদ্রার “আমাদের বক্ষ-চিতা এরূপে কি নির্বাপণ হইবে মা?” এই প্রশ্নের উত্তরে শৈলজার অভিব্যক্তিতেই তার চরিত্রের পরম মহত্ত্ব প্রস্ফুটিত;—