পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৩৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৭৬
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী

“মীরকাসিম” নাটকের নারীচরিত্র স্মরণ নেই, যেহেতু উক্তগ্রন্থ তিনখানি নিষিদ্ধফলরূপে নির্দিষ্ট হবার পূর্বেই পড়ে মুগ্ধ হয়েছিলাম, দ্বিতীয়বার আর চক্ষে দেখিনি।

 গিরিশচন্দ্র দ্বিজেন্দ্রলাল প্রসঙ্গে আরও দু’জন নাট্যকারের কথা এখানে বলা প্রয়োজন। অপরেশচন্দ্রের নাট্যশক্তিও নিতান্ত সামান্য ছিল না। “অযোধ্যার বেগম”এ যে চরিত্র তিনি প্রদর্শন করেছেন তা’ এ-দেশে আজকের দিনে বারবার করেই দেখতে পাওয়ার দরকার। “জিন্নৎ” একটি সুমিষ্ট নারীচরিত্র। “কর্ণার্জ্জুনের” পৌরাণিকারা মূলানুগা থেকেও সজীব এবং সুন্দরমূর্তি ধারণ করেছেন। আর এক বিষয়ে তাঁর শক্তি অনন্যসাধারণ ছিল, তা’ অপরের উপন্যাসকে নাট্য রূপ দেওয়ার কলাকৌশল। প্রত্যেকটি কথাবার্তা মূল গ্রন্থ থেকে আহরণ করে তার মর্যাদার এতটুকু হানি না করে তিনি যেমন কৃতিত্ব দেখিয়ে সাফল্যলাভ করেছিলেন সে-শক্তি অপরে দেখা যায়নি। নিজের লেখা অপরের রচনার মধ্যদিয়ে তার উদ্দেশ্য বদলে দিতে অথবা গ্রন্থকারের অঙ্কিত চরিত্র সম্পূর্ণ পরিবর্তন করে দিতে অপর নাট্যকাররা দ্বিধাবোধ মাত্র করেন না।

 যোগেশচন্দ্র চৌধুরীর “সীতা”য় অনুজ্জ্বল শ্রীরামচন্দ্র চরিত্র বহুল পরিমাণে খর্ব করা হয়েছে। শ্রীরামচন্দ্রের মহত্ত্ব বোধ হয় লেখক নিজেই ভাল করে বোঝেন নি, তা’ পরকে চেনাবেন কি করে? সীতা উদ্ধারের চেয়ে যে সীতবর্জনেই তাঁর মহত্ত্ব, ঘরের কোণে বসে সীতার অয়েলপেণ্টিং আঁকার চাইতে অশ্বমেধ যজ্ঞকালে সীতার স্বর্ণমূর্তি প্রতিষ্ঠা করে তাঁকে সহধর্মিণীর পদ দানে পতি রামচন্দ্র যে পত্নীর নির্দোষিতা সম্বন্ধে সম্পূর্ণভাবে