পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি

 মগধরাজ বিম্বিসারের সভাপণ্ডিতের মেয়ে সোমা বলেছেন: শ্রাবস্তীর কাছে এক বনে গাছতলায় বসে তিনি ধ্যান করছিলেন, —এমন সময় ‘মার’ তাঁর তপস্যাভঙ্গ করবার জন্য ভয় দেখাতে এসে অবজ্ঞাভরে বললে, “যোগী ঋষিরা বহু তপস্যায় যে পরমপদ লাভ করেন, তুমি সামান্যা নারী হয়ে কি করে তার সন্ধান পাবে? চিরকাল রাঁধো বাড়ো, তবু তো হাত পাকল না, এখন ও তো ভাত সিদ্ধ হ’ল কিনা বার বার টিপে দেখতে হয়।” তার উত্তরে সোমা নাকি তাঁকে বলেন:

“নারীজন্ম লভিয়াছি বল তাহে ক্ষতি কি আমার?
নরনারী সবাকার সত্যলাভে তুল্য অধিকার।
একাগ্র করিয়া চিত, আপনায় করিয়া নির্ভর,
অর্হতের পথ ধরি’ ধীরে ধীরে হ’ব অগ্রসর।
বিষয়বাসনা যত, কালে হবে ছিন্নমূল তার,
সত্যের আলোকে আর ঘুচে যাবে অজ্ঞান-আঁধার।
জান্ ওরে ভাল ক'রে, আপনারে দেখ্, দুরাশয়,
আমিও চিনেছি তোরে, নাহি আর নাহি কোন ভয়।”

(সত্যেন্দ্রঠাকুর)

 মন্তাবতীরাজ মঞ্চের কন্যা সুমেধা বাল্যেই বৌদ্ধধর্মের প্রতি অনুরাগিণী হয়েছিলেন। বারণাবতীরাজ অনিকর্তের সঙ্গে তাঁর বিয়ের কথা চলছিল। অন্ন জল ত্যাগ করে তিনি মাতাপিতাকে ব'ললেন “আমি সংসারসুখ চাই না, হয় প্রব্রজ্যা, নয় মৃত্যু বরণ করব।” শেষ পর্যন্ত তাঁর ইচ্ছারই জয় হ’ল, রাজকন্যা ভিক্ষুণী হয়ে শান্তি পেলেন।

 এই দ্বিতীয় শ্রেণীর মধ্যে সে যুগের এমন অনেক মেয়েকে