পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৪০৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮৪
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী

“বিদ্রোহ নয় বিপ্লবও নয়, ন্যায্য অধিকার।
উচিত বলে দণ্ড নে’বার দিন এসেছে আজ,
(যার জন্য) দুঃখবরণ করেছে মোর নির্দোষী প্রহ্লাদ।”

আজ সমস্ত ভারতভূমির বঙ্গভূমির মেয়েদের ক্ষুব্ধ অন্তর থেকে এই বিস্ময়বেদনা কি উথলে উঠছে না, আর তার সঙ্গে অননুভূতপূর্ব একটা আত্মগৌরবও কি সংমিশ্রিত নেই?—

“উচিত বলে দণ্ড নে’বার দিন এসেছে আজ,
উচিত বলে পরতে হবে চোর-ডাকাতের সাজ,
চিত্ত-বলের লড়াই সুরু পশু-বলের সাথ,
বন্যা-বেগের হানার মুখে কিশোর-তনুর বাঁধ!
প্রলয় জলে বটের পাতা! চিত্ত-চমৎকার!
তীর্থ হল বন্দীশালা, শিকল অলঙ্কার।
খেদ কিছু নাই, আর না ডরাই, চিত্তে মাভৈঃ রব;
উচিত বলে বন্দী ছেলে এ-মম গৌরব!
কয়াধু তোর জন্ম সাধু, মোছ রে চোখের জল,
রাজ-রোষেরি রোশনায়ে তোর মুখ হ’ল উজ্জ্বল!”[১]

 সত্যেন্দ্রনাথ ব্রাহ্মণ্য-বিদ্বেষ এবং মক্ষিকাবৃত্ত হয়ে বিরাট সমাজদেহের ক্ষত অন্বেষণ করে যথেষ্ট অসহিষ্ণুভাবে দেশমান্য প্রাজ্ঞ ও বিজ্ঞদেরও অযথা আক্রমণ করেছেন, কিন্তু মাতৃজাতির কোন চ্যুতি-বিচ্যুতিকেই তিনি লক্ষ্য করেন নি। অধিকাংশ কবিই তাই করেন, কিন্তু তা’তে নিরপেক্ষতা থাকে না। এক-


  1. (১৯৪৯) সেদিনের সঙ্গে প্রভূত প্রভেদ সত্ত্বেও বন্দী ছেলের জন্য মায়ের চোখের জল মুছবার সময় আজও আসেনি!