পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি
২৯

সাহিত্যে নারী শ্রী ও সৃষ্টি গর্ভও নয়। এ পাপপুষ্ট, মরণশীল বাপ-মার শরীর থেকে উৎপন্ন, ক্ষণভঙ্গুর, এর ক্ষয় এবং বিনাশ অবশ্যম্ভাবী। এ দেহ কাচার- নিরত, দুঃখের আকর, পরিদেবনার হেতু, ব্যাধির মন্দির, কমের ক্ষেত্র, কৃমির বাসভূমি। শ্মশানভস্মের পরিমাণ বাড়ানোই এর কাজ। মরণের পর শ্মশানে ফেলে দিলেই এর স্বরূপ লোকে বুঝতে পারে।” এর পর দীর্ঘ একটি দেহতত্ত্বের গাথা শুনিয়ে বললেন;“ভেবে দেখুন, এ রকম দেহ সাজিয়ে লাভ কি? .একে সাজানো আর মলভাণ্ডকে বাইরে চিত্রিত করে রাখা সমান কথা।” অতঃপর তাঁর স্বামী সংসারের প্রতি তাঁর বীতস্পৃহা দেখে তাকে প্রব্রজ্যা নে’বার অনুমতি দিলেন। দেবত্তের আশ্রমে ভিক্ষুণীদের যে উপায় ছিল, তিনি নিজে তাঁকে সেখানে রেখে এলেন। দুর্ভাগ্যক্রমে শ্রেষ্ঠিকন্যা তখন সবে অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন, তা তিনি নিজেই জানতে পারেননি। উপায়ে যাবার কিছুদিন পরেই তার গর্ভলক্ষণ প্রকাশ পাওয়ায় দুনামের ভয়ে দেবদত্ত তাকে তাড়িয়ে দেন। দীর্ঘপথ পদব্রজে চ'লে নিরুপায় নারী শ্রাবস্তীতে বুদ্ধের শরণাপন্ন হন। ভগবান্ বুদ্ধ অগ্রশাবিকা উৎপলবর্ণাকে দিয়ে তাকে পরীক্ষা করিয়ে ভিক্ষুণী- সঙ্ঘে স্থান দিলেন। এই শ্রমণ কালে অহত্ত্ব লাভ করেছিলেন। প্রসবান্তে তাঁর ছেলেটিকে রাজা প্রসেনজিৎ লালনপালনের জন্য রাজপ্রাসাদে নিয়ে যান। রাজকুমারদের সঙ্গে লালিত হওয়ায় তাকে সবাই কুমার কাশ্যপ বলে ডাকত। এই ভিক্ষু শ্রেষ্ঠের ধর্মজীবন এবং প্রতিভার জন্য তিনি তাঁর মা'র কাছে ঋণী।

 বৌদ্ধযুগের আর কয়েকজন বিখ্যাত। মনস্বিনী নারী ভিলী ধর্মপালী, তার শিষ্যা সম্রাটকন্যা সঙ্ঘমিত্রা, ভিক্ষুণী হেমা