পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী : স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি
৪৩

মেয়ের রাজ্যশাসন করতেন, সাজা প্রভৃতি বিদুষী ধর্মপ্রচার করতেন, মধ্যে মধ্যে এমন দৃষ্টান্তেরও অভাব নেই।

 মুসলিম রাজত্বের বিস্তৃতির সঙ্গে সঙ্গে স্ত্রীস্বাধীনতা কিছু কমল বটে কিন্তু পারস্য, ভারত, মিশর, নোম প্রভৃতি দেশের প্রাচীন সভ্যতার সঙ্গে সংস্পর্শে এসে আরবজাতির জ্ঞানস্পৃহা বাড়ল, ফলে স্ত্রীশিক্ষারও উন্নতি হ’ল। সপ্তম শতাব্দীতে হজরত মোহম্মদের কন্যা জোহরা, হজরতের কনিষ্ঠা পত্নী আয়শা এবং তার ভগ্নি এসম, হোসেনের কন্যা সকীন প্রভৃতি সুকবি এবং বিদুষী ছিলেন। তাঁরা প্রকাশ্য সভায় কবিতা পড়তেন এবং শাস্ত্র আলোচনা করতেন। খৃষ্টীয় অষ্টম শতাব্দীতে শেখা শুহ,দা বাগদাদ নগরে ইতিহাস, সাহিত্য প্রভৃতি বিষয়ে প্রকাশ্যে বক্তৃতা দিতেন। এই সময়ে মুসলিম জগতের অদ্বিতীয়া ধর্মনেত্রী এবং সাধিকা তপস্বিনী রাবেয়া বা নগরে লক্ষ লক্ষ নরনারীকে ধর্মদীক্ষা দিয়েছেন। তাঁর মুখে ধর্মোপদেশ শোনবার জন্য যেমন জনসাধারণের আগ্রহের অন্ত ছিল না, তেমনি তিনিও নিরলস ভাবে চিরদিন জ্ঞানের সাধনা করতে ত্রুটি করেন নি, সাধকবর হোসেন বাস্ত্রীয় ধর্মসভায় নিয়মিত জিজ্ঞাসু রূপে উপস্থিত থাকিতেন। সামান্য ক্রীতদাসী থেকে নিজের চেষ্টায় আত্মোন্নতি করে চরিত্রের এবং সাধনার বলে রাবেয়া মুসলিম জগতের প্রণম্যা এবং সর্বদেশের সর্বকালের প্রকৃত ধর্মপ্রাণ নরনারীদের মধ্যে অন্যতম। বলে স্বীকৃত হয়েছেন।

 মৌর্যযুগ থেকে মুসলমান রাজত্বের পূর্ব পর্যন্ত দেড় হাজার বছর ধরে বন্ধু নারী ভারতবর্ষের ধর্মে সাহিত্যে এবং কাব্যে তাদের দান রেখে গেছেন। তাদের মধ্যে প্রাথমিক যুগের বৌদ্ধ-