পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৮৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী
৬৫

 “যতই তুমি চঞ্চল ঘোড়া নাচিয়ে রাস্তায় রাস্তায় সহরের লোককে চাপাদিয়ে বেড়াও, তোমার ঐশ্বর্য তোমার নিজের বাহুবলের দ্বারা উপার্জিত নয়, নিজের ভগ্নী বিক্রয় করেই তুমি এই সৌভাগ্য লাভ করেছ।”

 খৃষ্টীয় ষোড়শ শতাব্দীর প্রথমদিকে রাজপুতানায় রাজা সংগ্রামসিংহের মা ‘দেবকুমারিকা’ বৈদ্যনাথের মন্দিরস্থাপন উপলক্ষ্যে ‘বৈদ্যনাথ প্রশস্তি’ নামক এক ঐতিহাসিক কাব্য লেখেন, সেটি এখনও পাওয়া যায়। এই যুগেই মালাবারের লক্ষ্মীরাজ্ঞী ভাগবৎপুরাণের একটি গল্প নিয়ে ‘সান্তনা-গোপাল কাব্য’ রচনা করেন।

 ষোড়শ শতাব্দীর শেষ দিকে তাঞ্জোররাজ অচ্যুতরায়ের পত্নী তিরুমলাম্বা তাঁর স্বামীর সঙ্গে ‘বরদাম্বিকা’ নাম্নী তাঁর সপত্নীর প্রণয় এবং বিবাহ ঘটনা উপলক্ষ্য ক’রে একটি কাব্য রচনা করেন। এই নিরাসক্তচিত্ত কবির পতিপ্রেম আজকের দিনে অনেকের অদ্ভুত লাগতে পারে, কিন্তু কাব্যের বিষয়বস্তু থেকে নির্লিপ্ত না হ’লে কবির রচনা সার্থক এবং সুন্দর হয়না, একথা তিরুমলাম্বার জানা ছিল তাই কাব্যরচনার সময় সপত্নী-বিদ্বেষ তাঁকে অভিভূত করতে পারেনি। পরবর্তী পরমবিদ্যোৎসাহী তাঞ্জোররাজ রঘুনাথ সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথম দিকে বিদ্যোৎসাহী এবং সুপণ্ডিত ছিলেন, বহু নারী কবিকে তিনি তাঁর রাজসভায় স্থান দিয়েছিলেন। এঁদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাতা মধুর বাণী রঘুনাথের লেখা তেলুগু রামায়ণ সংস্কৃতে অনুবাদ করেছিলেন। কুমারসম্ভব এবং নৈষধকাব্য ও তিনি নিজের মনের মতো ক’রে সংস্কৃতে লিখেছিলেন। এই যুগের সুভাষিতহারাবলীতে মধুরবর্ণী