পাতা:সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী.pdf/৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬৬
সাহিত্যে নারী ⦂ স্রষ্ট্রী ও সৃষ্টি - অনুরূপা দেবী

নাম্নী একজন নারীকবির রচনা পাওয়া যায়, দু’জনে অভিন্ন বলেই মনে হয়। মধুরবর্ণীর একটি অম্লমধুর কবিতায় কোনো অসতী নারীর স্বামীকে কেন ভালো লাগে না, তার কারণ দেওয়া আছে:

“আকারেণ শশী গিরা পরভৃতঃ পারাবতশ্চুম্বনে
হংসশ্চক্রমণে সমং দয়িতয়া রত্যাং বিমর্দে গজঃ।
ইত্থং ভর্তরি মে সমস্ত যুবতি-শ্লাঘ্যৈর্গুণৈং কিঞ্চন
ন্যূনং নাস্তি পরং বিবাহিত ইতি স্যান্নৈক-দোষো যদি॥”

 “আমার স্বামীর রূপ চাঁদের মতো সুন্দর, কণ্ঠস্বর কোকিলের মতো মিষ্ট, তাঁর গতি রাজহংসের মতো,…যুবতীদের কাম্য কোনো গুণেরই তাঁর অভাব নেই। তাঁর একমাত্র দোষ তিনি আমার বিবাহিত পতি।”

 এতক্ষণ যাঁদের নাম করলুম তাঁদের অধিকাংশই বাংলার বাইরের মেয়ে। এই বার কয়েকজন বাঙ্গালী নারীর নাম ক’রব, যাঁরা তিন চারশ’বছর আগে মোগল পাঠান-মগ-ভুঁইয়া-পর্টুগিজ রাজা এবং দস্যুদের সংঘর্ষে বিধ্বস্ত বাঙ্গলার সেই নিরতিশয় দুর্দিনে মুসলমানরাজত্বের সশঙ্কিত আবহাওয়ায় সুদূর পল্লীগ্রামে ব’সে দেবভাষার চর্চায়, অধ্যয়নে এবং অধ্যাপনায় বাঙ্গালী নারীর সংস্কৃতির ধারাবাহিকতা রক্ষা এবং তাদের মুখোজ্জল ক’রে গেছেন। একটি নারীরচিত শ্লোক আপনারা হয়তো অনেকেই শুনেছেন, তবু এখানে উল্লেখ না ক’রে পারলুমনা:

“কালিন্দী পুলিনেষু কেলিকলনং কংসাদিদৈত্যদ্বিষং।
গোপালীভিরভিষ্টুতং ব্রজবধূ-নেত্রোৎপলৈরর্চিতং॥
বর্হালঙ্কৃতমস্তকং সুললিতৈ রঙ্গৈ স্ত্রিভঙ্গং ভজে।
গোবিন্দং ব্রজসুন্দরং ভবহরং বংশীধরং শ্যামলং॥”