পাতা:সাহিত্য-চিন্তা - কুমুদিনী বসু.pdf/১০৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সৌন্দর্য্য-তত্ত্ব
১০১

 জ্ঞান আমাদের নিকট কেবল বস্তু-তত্ত্বই নির্ণয় করিয়া থাকে। সুদূরস্থ নীহারিকা-পুঞ্জে নক্ষত্রে নক্ষত্রে, গ্রহে গ্রহে ভ্রমণ করিয়া বিজ্ঞান সৃষ্টিতত্ত্ব নির্দ্ধারণ করিতেছে। মহাসমুদ্রের অতল গর্ভে প্রবেশ করিয়া কোথায় কোন্ পদার্থ, কোন্ রত্ন নিহিত রহিয়াছে, তাহা জ্ঞাপন করিতেছে, ভূগর্ভে প্রবিষ্ট হইয়া পৃথিবীর জন্মকাল নির্ণয় করিতেছে; কিন্তু তাহাকে সৌন্দর্য্যে শোভিত-করা— ভাব-সম্পদে ভূষিত করা, জ্ঞানের সাধ্য নয়; প্রেমেই কেবল এই দুজ্ঞেয় সৃষ্টিলীলাকে সৌন্দর্য্যে মহিমাময়ী করিয়া তুলিয়াছে। কবি, ভাবুক, ভক্তের নিকট বিজ্ঞানের জটীল রহস্যও কত মাধুর্য্যময়!

 ইটালীর সুসন্তান কবিবর দান্তে বলিয়াছেন, মানবহৃদয় প্রেমে সুন্দর না হইলে তাহা হইতে কবিতার উৎপত্তি হইতে পারে না। প্রেম স্বয়ং বিশ্বাতীত এবং সৌন্দর্য্যের সার। আর্য্য কবিগণ তাঁহাদের অতুলনীয় তুলিকায় প্রেমের মাধুরী বিচিত্র বর্ণে চিত্রিত করিয়াছেন।

 প্রেম সত্য সত্যই সুন্দর। কিন্তু এই মর্ত্যলোকে প্রেমের সৌন্দর্য্য কোথায় মূর্ত্তি গ্রহণ করিয়া প্রকাশ পাইয়াছে?—নারীচরিত্রে। পৃথিবীর কাব্য ইতিহাস এইরূপ শতশত জীবন্ত নারী-চিত্রে পূর্ণ রহিয়াছে।