পাতা:সাহিত্য-চিন্তা - কুমুদিনী বসু.pdf/১১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০৪
সাহিত্য-চিন্তা

হরণ করা তাহার মৃত বলশালী বীরের পক্ষে কিছুমাত্র আয়াস-সাধ্য নয়। বৃথা বাক্যব্যয়ে প্রয়োজন কি? এই ভাবিয়া সে দুর্ব্বৃত্ত রাক্ষস দুই পদ অগ্রসর হইয়া বেদবতীর কেশাগ্র ধারণ করিল। কিন্তু দুর্জ্জয় দৈববলের নিকট পাশব-বল পরাস্ত হইল। সহসা সেই লাবণ্যময়ী তরুণীর কান্তি আশ্চর্য্য ব্রহ্মতেজে দীপ্ত হইয়া উঠিল এবং প্রবল পরাক্রান্ত দশাননকে ভীত ও স্তম্ভিত করিয়া ফেলিল।

 বেদবতী কহিলেন,—“দুরাচার, কেশ স্পর্শ করিয়া আমার দেহ অশুচি করিয়াছিস্। আমি অগ্নিতে এই দেহ আহুতি প্রদান করিয়া মৃত্যুর পর প্রিয়তমের সঙ্গে মিলিত হইব।”

 এই বলিয়া সেই জ্যোতির্ম্ময়ী নারী সমীপস্থ যজ্ঞীয় অগ্নিতে প্রবেশ করিয়া ধর্ম্মের মর্যাদা রক্ষা করিলেন। সর্ব্বভুক্ হুতাশন দেখিতে দেখিতে বেদবতীর কমনীয় দেহ ভস্মীভূত করিয়া ফেলিল। প্রেম, পবিত্রতা ও আত্মোৎসর্গের কি জীবন্ত সৌন্দর্য্য!

 সত্য সত্যই নারী ধর্ম্মের রক্ষয়িত্রী। নারী যদি প্রেমের অমৃত-রসে ধরণীকে সঞ্জীবিত না করিতেন, তবে জন-সমাজ মরুভূমিতে পরিণত হইত! স্নেহময়ী