পাতা:সাহিত্য-চিন্তা - কুমুদিনী বসু.pdf/২৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সমাজ-ব্যাধি ও তাহার প্রতিকার
২১

নির্জীব হইয়া পড়িবে সন্দেহ নাই। মহামহীরুহ প্রকৃতিরাজ্যে অনেক কাজ করে; তৃণ সামান্য হইলেও তাহার কার্যকারিতা সামন্য নয়। স্বয়ং শ্রীরামচন্দ্র চণ্ডাল মিত্রকে সাদরে আলিঙ্গন করিতে এবং কিরাত জাতীয়া শবরীর আতিথ্য গ্রহণ করিতে কিছুমাত্র সঙ্কুচিত হন নাই। কিন্তু যুগযুগান্তর পরে সেই ভারতের অবস্থা কি দাঁড়াইয়াছে? তাঁহাদের বংশধরগণ আজ তথাকথিত নীচ জাতির ছায়াস্পর্শেও আপনাদিগকে অশুচি বোধ করেন।

 হিন্দুসমাজের বৃহত্তর অংশই নিম্নশ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। জীবন-বীণার যে তারে কমলার বন্দনা-গীতি ধ্বনিত হইয়া উঠে তাহা সর্ব্বতোভাবে ইহাদেরই করধৃত। কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য সমস্তই ইহাদের শরীরের রক্তে পরিপুষ্ট।

 যেমন মানব দেহের কোন স্থান কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত হইলে ক্রমে তাহা সর্ব্ব শরীরে ছড়াইয়া পড়ে এবং অবিলম্বে তাহাকে ধ্বংসের পথে লইয়া যায়, সেইরূপ সমাজের এই নিম্নস্তর অনুন্নত অবস্থায় থাকাতে আমাদের জাতীয় জীবনের অন্তস্তলে যে কুঠারাঘাত পড়িতেছে তাহাতে কি সংশয় আছে?