পাতা:সাহিত্য-চিন্তা - কুমুদিনী বসু.pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ছায়া-পথ

 অনন্ত নীল আকাশে নক্ষত্রপুঞ্জ,—মরি মরি! কি অপরূপ শোভা! হাজার হাজার হীরার ঝাড় যেন ঝক্ ঝক্ করিয়া জ্বলিতেছি! উজ্জ্বলে মধুর, মধুরে মহান্! এ মহত্ত্ব ও মধুরতার সংমিশ্রণে কি এক অনির্ব্বচনীয়, অভাবনীয় মহাশক্তির বিকাশ অনুভূত হইতেছে।

 যখন তামসী রজনীর কৃষ্ণছায়ায় মেদিনীর শ্যাম সুন্দর কলেবর আচ্ছাদিত হইয়া পড়ে, যখন শ্রান্ত ক্লান্ত জীবকুল বিরামদায়িনী নিদ্রার ক্রোড়ে শয়ান হইয়া,— কর্ম্মক্ষেত্রের অনন্ত শ্রম ক্লেশ বিস্মৃত হয়, সেই সময় একবার সুন্দর নীল নভোমণ্ডলের বিশ্বমোহন কান্তি অবলোকন করিলে কি আনন্দে প্রাণ পরিপূর্ণ হয়! যেন স্বর্গীয় উদ্যানে কোটি কোটি পুষ্প স্তবকে স্তবকে প্রস্ফুটিত! যেন বৈজয়ন্তপুরীর সহস্র সহস্র দ্বার উন্মুক্ত করিয়া অগণিতসুর-সুন্দরী অনিমেষ নয়নে মর্ত্যবাসীদিগকে দর্শন করিতেছেন। যেন কোন অজ্ঞাত রাজ্যের বার্তা বহন করিয়া লইয়া সেই নীরব নিস্তব্ধ নিশীথে প্রকৃতিদেবী এক মহাধ্যানে নিমগ্ন! সেই সময় অনন্ত সত্য সুন্দর .. চিদ‍্ঘন মাধুরী প্রাণের উপর কেমন পরিস্ফুট হইয়া উঠে।