পাতা:সাহিত্য-চিন্তা - কুমুদিনী বসু.pdf/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ছায়া-পথ
৭৫

করিয়া ধারণা করিব? চিন্তা করিতে চিন্তাশক্তি অবসন্ন হইয়া পড়ে। তিনি কোন্ উদ্দেশ্যে এই অনন্ত রবি পুঞ্জের সৃষ্টি করিয়াছেন, এবং কোন্ উদ্দেশ্যেই বা সৌরজগৎ পরিবেষ্টিত রবিস্তবক স্তর-শোভিত ছায়াপথের রচনা করিয়া আপনার মহামহিমান্বিত নীলা প্রকাশিত করিয়াছেন, তাহা কে বুঝিবে? সেই বিস্ময়কর তত্ত্বের এক কণাও মানববুদ্ধির গম্য নহে। মনুষ্যের ক্ষুদ্র বুদ্ধিপ্রসূত সামান্য দূরবীক্ষণ যন্ত্রদ্বারা সেই মহাসৃষ্টির অতি সামান্য অংশই দৃষ্টি গোচর হয়। এই মহাবিশ্বকার্য্য যাঁহার রচন। তিনি ইহাতে প্রাণরূপে প্রতিষ্ঠিত।

 এই মহত্ত্বের কুল কিনার না পাইয়া হার্ব্বাট স্পেন্সার প্রমুখ অজ্ঞেয়তাবাদী প্রতীচ্য পণ্ডিতগণ মহান্ সৃষ্টিতত্ত্ব হইতে ব্রহ্মতত্ত্বকে পরিহার করিতেই চেষ্টা পাইয়াছেন। কিন্তু ভারতের পরম জ্ঞানী মহর্ষিগণ জলদগম্ভীরনাদে ঘোষণা করিয়াছিলেন,—“এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড সেই মহান্ পুরুষে অবস্থিত রহিয়াছে।”

 নক্ষত্রপুঞ্জ দূরত্ব বশতঃই এত ক্ষুদ্র বলিয়া প্রতীত হয়, তাহা পূর্ব্বে লিখিত হইয়াছে। নক্ষত্রগুলি পরস্পর সুদূরবর্ত্তী হইলেও যে ধরাতল হইতে এত ঘন সন্নিবিষ্ট প্রতীয়মান হয়, দুরত্বই তাহার একমাত্র কারণ।