পাতা:সাহিত্য-মীমাংসা - বিষ্ণুপদ ভট্টাচার্য্য.pdf/১০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্য ও রসতত্ত্ব పె) ইহার কারণ কি ? শব্দ, কেবলমাত্র শব্দ,—আর কিছুই নহে । সুতরাং সহৃদয়ের রসাচুভূতির প্রতি যে শকুন্তলাদি বিভাব কারণরূপে পরিগণিত হইয় থাকে তাহারা তো সম্পূর্ণরূপে তাহারই আস্তর স্বষ্টিমাত্র! নাট্যরঙ্গমঞ্চের পরিদৃশ্যমান অমুকৰ্তা নট প্রভৃতিকে বিভব বলিয়া লাভ কি ? অতএব বাস্তববৃষ্টিতে বিভাব প্রভৃতি সমস্তই সহৃদয়ের চিত্তে শব্দোপনীত মানস পদার্থ মাত্র—বাহ জড় পদার্থ নহে। স্বতরাং রসও যখন সহৃদয়ের মানস অনুভূতি, বিভাব প্রভৃতিও যখন সহৃদয়েরই সাকার বিজ্ঞানমাত্র, তখন উভয়ের মধ্যে কার্যকারণভাবের ব্যাঘাত কি করিয়া থাকিতে পারে ? কিন্তু এ তো গেল শব্দময় কাব্যের ক্ষেত্রে । পদার্থীভিনয়াকস্মক নাট্যস্থলে বিভাব, অকুভাব প্রভৃতির সহিত আন্তর রসামুভূতির একাশ্ৰয়তা কিরূকে রক্ষিত হইবে ? সেখানে তো অালম্বনবিভাব, উদ্দীপনবিভাব প্রভৃতি সমস্তই বাহাবস্তু ! দুন্যস্ত, শকুন্তলা, কন্ধের তপোবনে মাধবীলতার বিবিক্রমণ্ডপ,— নাট্যের যত কিছু উপকরণ সকলই তো দর্শকচিত্তের বহিভূত ? জগন্নাথ তাহার রসগঙ্গাধর' গ্রন্থে অভিনব গুপ্তপাদের ব্যক্তিবাদ অালোচনা প্রসঙ্গে বলিয়াছেন যে, স্বপ্নদৃষ্ট রথ তুরগ প্রভৃতি উপকরণ যেমন আত্মচৈতন্তেরই অবিদ্যার বিলাসমাত্র, তাহীদের যেমন স্বতন্ত্র বাহ কোনও সত্তা নাই; কিংবা শুক্তিতে রজত ভ্ৰাস্তি যেমন বাস্তব রজতস’ স্পর্শবিহীন, আত্মাশ্রিত অবিদ্যারই পরিণাম মাত্র, সেইরূপ নাট্যাভিনীত বিভাব, অকুভাব প্রভৃতি বিচিত্র পদার্থসমূহও স্বপ্নদৃষ্টপদার্থের মত, অথবা ভ্ৰমজ্ঞানের বিষয়ীভূত রজতাদি বস্তুর মৃতই বাহসত্তাশূন্ত বলিয়। প্রতীত হইয়া থাকে। বাহ ঘটাদি বিষয়ের প্রত্যক্ষের জন্য যেমন চক্ষু প্রভৃতি বহিরিন্দ্রিয়ের সাহায্যের অপেক্ষা করে, নাট্যাভিনীত পদার্থ প্রত্যক্ষের জন্য বহিরিন্দ্রিয়ের সেইরূপ সাহায্য অপেক্ষিত নহে । উহারা যেন স্বপ্নদৃষ্টপদার্থের মত, অথবা ভ্রান্তরজতাদির মত ইন্দ্রিয়নিরপেক্ষ প্রত্যক্ষবিশেষ । ইন্দ্ৰিয়নিরপেক্ষ আত্মচৈতন্যই উহাদের প্রকাশক,