পাতা:সাহিত্য-মীমাংসা - বিষ্ণুপদ ভট্টাচার্য্য.pdf/১০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

。ケ সাহিত্য-মীমাংসা দিতেছে যে, আর্য কোন রাজর্ষিবংশ অলঙ্কত করিয়া থাকেন ? কোন জনপদের অধিবাসিগণ মহাভাগের প্রবাসজনিত বিরহে পযুৎস্থকহদয় হইয়া রহিয়াছে ? কি নিমিত্তই বা আর্য এই নিরতিশয় সুকুমার আত্মাকে তপোবনপরিভ্রমণ-জনিত ক্লেশের ভাজন করিয়াছেন ?” আশ্রমকন্যা অনস্বয়ার মুখে, “আর্য কোন দেশ হইতে আগমন করিতেছেন, কি জন্যই বা আর্যের এই তপোবনে আগমন ?”—দুন্যস্তের প্রতি এইরূপ নিরাভরণ প্রশ্ন নিতাস্তই প্রাকৃতজনোচিত হইত ; কালিদাস তাহাকে বক্র করিয়াছেন, তাহাতে বৈদগ্ধ্যযোজনা করিয়াছেন, যাহার ফলে উহ! সাহিত্যে স্থানলাভের যোগ্য হইয়া উঠিয়াছে । এই উক্তিকৌশল, এই *বৈদগ্ধ্যভঙ্গীভণিতি,” এই বক্রোক্তিই সাহিত্যিক সৌন্দর্যের নিদান । এবং সাহিত্যমীমাংসকসম্প্রদায় যে সকল উক্তিবৈচিত্র্য অলঙ্কার বলিয়া স্বীকার করিয়া লইয়াছেন, সে সকলেরই মূলে আছে বক্রতা’ বা ‘বৈদগ্ধ্যভঙ্গীভণিতি । এই বক্রোক্তিরই অপর নাম ‘অলঙ্কার । উপম, উৎপ্রেক্ষা, রূপক, অতিশয়োক্তি, সমাসোক্তি, অপ্রস্তুতপ্রশংসা প্রভৃতি প্রসিদ্ধ অলঙ্কার এই পক্রোক্তির উপরই প্রতিষ্ঠিত। বক্রোক্তিই তাহাদের প্রাণস্বরূপ । আচাম কুম্ভক তাহার ‘বক্রোক্তি-জীবিত গ্রন্থে স্পষ্টই বলিয়াছেন— “পদসমুদায়াত্মক বাক্যের সহস্র প্রকারে বক্রত। সম্পাদন কর। যাইতে পারে এবং সেই বক্রতা’র মধ্যেই সকল অলঙ্কারবর্গ নিঃশেষে অস্তভূক্ত হইবে ” যেমন, মুখটি অতিশয় সুন্দর", এই বাক্যটিকেই মুখটি চন্দ্রের মত স্বন্দর’, মুখটি যেন চন্দ্র, ইহা মুখ নহে, ইহা চন্দ্র, এই মুখটি চন্দ্র হইতেও অধিকতর মুন্দর, এইরূপে যথাক্রমে উপমা, উৎপ্রেক্ষা, অপহ্ন তি, ব্যতিরেক প্রভৃতি অলঙ্কারের আকারে শত শত কবিজনোচিত বিদগ্ধভঙ্গীতে প্রকাশ করা যাইতে পারে। উদ্দেশ্য একই—মুখের সৌন্দর্য বর্ণনা ; বাক্যবিন্যাসেক্ট কেবলমাত্র ভেদ । অতএব এই বিন্যাসভেদ বা বক্রতাই যে অলঙ্কারের