পাতা:সাহিত্য-মীমাংসা - বিষ্ণুপদ ভট্টাচার্য্য.pdf/১১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাব্য ও অলঙ্কার ס\ס ל অলঙ্কার-বিন্যাস করিবেন, তিনি সাহিত্যিক সৌন্দর্যের মূল তত্ত্ব বিষয়ে সম্পূর্ণ অনভিজ্ঞ । মহর্ষি কম্বের আশ্রমে পুষ্পভরণমণ্ডিত। শকুন্তলার যে মূতি মহারাজ দুৰ্যস্তের দৃষ্টি বিমোহিত করিয়াছিল, সপ্তম অঙ্কে মহাকবি সেই শকুন্তলাকেই আবার নিরাভরণ মূর্তিতে দুষ্মন্তের সম্মুখে উপস্থিত করিয়াছেন। প্রথম ক্ষেত্রে আভরণ-বিন্যাস সম্ভোগের উপকরণ ছিল, কিন্তু দ্বিতীয় ক্ষেত্রে নিরাভরণ পাণ্ডুতাই বিপ্ৰলম্ভ ব্যথাকে মূতিমতী করিয়া তুলিয়াছে। সমাহিত মহাদেবের তপোভঙ্গের জন্য প্রণয়মুগ্ধা পাৰ্বতীর কত প্রসাধন, কত বিচিত্র আভরণ-বিন্যাস । কিন্তু উপেক্ষিতা, অবমানিত পার্বতী যখন তপস্যায় প্রবৃত্ত, তখন তাহার অঙ্গ আভরণহীন, ‘বাধকশোভি বল্কল' তাহার ভূষা ! ধ্বনিবদিগণের বৈশিষ্ট্য এই ষে, তাহারা সৌন্দর্যের এই নিগৃঢ় তত্ত্ব উপলদ্ধি করিতে পারিয়াছিলেন, এবং কবি ও সহৃদয়সমাজে ইহার প্রচার করিতে কিছুমাত্র কুষ্ঠিত হন নাই । অলঙ্কারসমূহ—সাহিত্যিকই হউক, অথবা লৌকিকই হউক, যে সৌন্দর্যের উপাদান বলিয়া গৃহীত হয়, সে তাহাদের স্বতন্ত্র সৌন্দর্যের জন্য নহে, প্রকৃত রসের উৎকর্ষসাধনের তাহারা উপায় বলিয়া । রসই উপেয়, অলঙ্কার তাহার উপায় মাত্র। যদি অলঙ্কারের অপসারণের দ্বারা রসবোধের গভীরতা বুদ্ধি পায়, তবে তাহাই কর্তব্য । নিরলঙ্কার স্বভাবেtক্তিই সেখানে অলঙ্কত বক্রোক্তির সমস্থানীয় । ধ্বনিবাদের প্রচারের ফলে অলঙ্কার সম্বন্ধে প্রাচীন দৃষ্টিভঙ্গীর অন্যান্য আরও পরিবর্তন সংঘটিত হইল । প্রাচীন মতবাদের সহিত যাহারা পরিচিত তাহারা মনে করিতে পারেন যে, কাব্যদেহের সহিত অলঙ্কারের সম্বন্ধ অনেকটা নারীদেহের সহিত কটককুণ্ডলাদির সম্বন্ধের মতই। ইচ্ছানুযায়ী তাহার সংযোজন ও বিশ্লেষণ সম্ভবপর। কবি যেন পূর্বে মনে মনে অনলঙ্কত শুদ্ধ শব্দার্থযুগল কল্পনা করিয়া পরে ভাবয়া চিন্তিয়া যমক, অকুপ্রাস প্রভৃতি শব্দালঙ্কার ও উপমা, রূপক প্রভৃতি অর্থালঙ্কারসমূহ তাহার রুচি অনুসারে কাব্যদেহে বিন্যস্ত করেন। সুতরাং অলঙ্কারযোজনার অব্যবহিত পূর্বে