পাতা:সাহিত্য-মীমাংসা - বিষ্ণুপদ ভট্টাচার্য্য.pdf/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

\() সাহিত্য-মীমাংসা তুলিয়াছেন, শুধু নিজেদের পাণ্ডিত্য ও বাক্‌চাতুর্যের পরিচয় দিবার ছলে। ইহার কারণ আছে। আমাদের শাস্ত্রধারার বৈশিষ্ট্য এই যে, শাস্ত্রকারগণ তাহাদের প্রতিটি উক্তি উপযুক্ত যুক্তির দ্বারা, হেতুর দ্বারা, দৃষ্টান্ত প্রদর্শনের দ্বারা সমর্থন করিবার চেষ্টা করিয়াছেন। তাহারা জানিতেন যে, হেতুশূন্ত অযৌক্তিক কোনও সিদ্ধান্তই প্রতিবাদিগণ গ্রহণ করিবেন না, হাসিয়া উড়াইয়। দিবেন। “একাকিনী প্রতিজ্ঞ হি প্রতিজ্ঞাতং ন সাধয়েৎ ।” তাহাদের আলোচনার এই অত্যধিক যুক্তিমূলকতার কারণ ন্যায়শাস্ত্রের— আমরা যাহাকে Logic বলি—অত্যধিক পঠনপাঠন । অাম্বীক্ষিকী বা ন্যায়শাস্ত্র সমস্ত শাস্ত্রচর্চার প্রদীপস্বরূপ—“প্রদীপ; সর্বশাস্ত্রণাম উপায়ঃ সর্বকৰ্মণাম।” ন্যায়শাস্ত্রের সিদ্ধান্তচুযায়ী চিন্তা করিবার রীতি, শাস্ত্রবিচার করিবার প্রণালী আমাদের পূর্বাচার্যগণের স্বভাবসিদ্ধ হইয়া গিয়াছিল। দুরূহ দার্শনিক বিচারে যেমন ন্যায়শাস্ত্রের প্রয়োগ ছিল, উপযোগিতা ছিল, সাহিত্য-মীমাংস বিষয়েও তাহার প্রয়োগ ও উপযোগিতা কিছুমাত্র কম নয় । বর্তমানের ন্যায় Logicএর চর্চ তাহদের নিকট ব্যবহারজীবনের সহিত সম্পর্কশূন্ত, কেবলমাত্র প্রয়োগহীন academic studyতে পর্যবসিত হয় নাই । তাহীদের চিন্তাধারার সহিত উহা অঙ্গণঙ্গিভাবে অবিচ্ছেদ্যরূপে জড়িত ছিল । কিন্তু আমাদের নিকট এই অত্যধিক যুক্তিনির্ভরতা, আন্বীক্ষিকৗপ্রিয়তা—logicophilia, অসহ । বর্তমানের ইউরোপীয় মনীষিগণ ও আরিস্তত্ল-এর Syllogism অনুযায়ী বিচার করিতে বসেন না। আমাদের কাছে যুক্তি অপেক্ষ ভাবোচ্ছাসই অধিকতর প্রিয়। তাহার মধ্যে অনেক বাষ্প আছে, কিন্তু উত্তাপ নাই ; উন্মাদনা আছে, কিন্তু প্রেরণা নাই । সুতরাং আমরা যে প্রাচীন ভারতীয় 5. "...It seems to me that one of the reasons why our people are alive and flourishing, and have avoided many of the troubles that have fallen to less happy nations, is because we have never been guided by Logic in anything we have done.”—Baldwin : Prof. L. Susan Stebbing zoo, ‘Thinking to Some Purposs' &GE Gęs į į. »»—Pelioan Books