পাতা:সাহিত্য-মীমাংসা - বিষ্ণুপদ ভট্টাচার্য্য.pdf/৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্য ও রসতত্ত্ব २ ॐ জড়জগতের নিয়ম উহাদের স্পর্শ করিতে পারে না, উহারা ‘নিয়মের রাজত্বের বহু উধের অবস্থিত । এই বিভব বা সাহিত্যিক কারণকলাপ আবার দুইটি বিশিষ্ট শ্রেণীতে ভক্ত –একটির নাম ‘অালম্বন’বিভাব, অপরটির নাম ‘উদ্দীপন'বিভাব । অালম্বন শব্দের অর্থ বিষয়,—অর্থাৎ চিত্তবৃত্তির বিষয় । আমাদের চিত্তের যত কিছু বৃত্তি বা বিকার (modification), তাহ কোনও না কোনও একটি নির্দিষ্ট বস্তুকে অবলম্বন করিয়া উদ্ভূত হয়। যখন ঘটজ্ঞান হইল,—তখন আমাদের চিত্তের যে জ্ঞানাত্মক পরিণাম (consciousness) সংঘটিত হইল, উহার আলম্বন’ বা বিষয় একটি নির্দিষ্ট ঘট । মোট কথা, অালম্বন বা বিষয়ই আমাদের চিত্তবৃত্তির মুখ্য কারণ। ‘ঘট’ না থাকিলে উহাকে আলম্বন করিয়া যে ঘটবিষয়ক জ্ঞান জন্মাইল, তাহ আদৌ সম্ভবপর হইত ন। সাহিত্যক্ষেত্রেও সহৃদয়ের যে রসাত্মক চিত্তবৃত্তি, তাহারও একটি বিশিষ্ট কারণ আছে। কোনও একটি বিশিষ্ট কারণকে অালম্বন কব্লিয়াই ঐরুপ ভাববিকার বা emotion জন্মলাভ করে। ঐ রূপ বিভাবকেই সাহিত্যমীমাংসকগণ ‘অালম্বনবিভাবী কহিয়া থাকেন। যেমন, ‘অভিজ্ঞানশকুন্তল নাটকে দুষ্যস্তের হৃদয়ে যে রতিভাব বা শৃঙ্গাররসের আবির্ভাব বর্ণিত হইয়াছে,—উহার আলম্বনবিভাব শকুন্তলা। কেন না, শকুন্তলা-সন্দর্শনেই মহারাজ দুষ্যস্তের কামনা জাগ্রত হইয়া উঠিয়াছে। সেইরূপ, শকুন্তলাও দুষ্যস্তের দর্শনমাত্রেই তাহার প্রতি অনুরাগপরবশ হন। অতএব, আর একদিক হইতে আলোচনা করিলে শকুন্তলার ভাববিকারের ‘আলম্বন-বিভব মহারাজ দুষ্যস্ত স্বয়ং। এইরূপে দুষ্যস্ত ও শকুন্তলা পরস্পর পরস্পরের রতিভাবের প্রতি আলম্বন। অন্যান্য রসের ক্ষেত্রেও সেই একই কথা । 'বেণীসংহারে? ভীমের ষে রৌদ্ররস, উহার আলম্বন-বিভাব দ্ৰৌপদীর কেশাকর্ষণ ও বস্ত্রহরণের অপমানজনক বীভৎস দৃশু। মেঘদূতের নির্বাসিত যক্ষের বিপ্ৰলম্ভ-শৃঙ্গাৰে’র আলম্বন-বিভাব বিরহিণী যক্ষপত্নী । অপর পক্ষে, উদ্দীপন-বিভাব ঠিক এইরূপ অর্থে আমাদের চিত্তবৃত্তির